পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য । “NA প্রথমে ঐ দুই বন্দরে আসিয়া পৌছিত। সেখান হইতে উঠু-পৃষ্ঠে মিশরের কোপ্টস্বন্দরে ঐ সকল পণ্য-দ্রব্য সংবাহিত হইত। তথা হইতে বণিকগণ পুনরায় পোতযোগে তৎসমুদায় আলেক্জান্দ্রিয়ায় লইয়। যাইতেন। এ পথে এভাবেও অনেক দিন বাণিজ্য চলিয়াছিল । ষ্ট্রাবো লিখিয়া গিয়াছেন,—তিনি এক সময়ে ১২০ খানি অর্ণবযানকে ‘মৈওস হোরমোঁজ হইতে ভারতাভিমুখে যাত্রা করিতে দেখিয়াছিলেন । ৪াবে এবং পুলুটার্ক প্রভূতি পাশ্চাত্য-পণ্ডিতগণ বিদেশ-গমনোপযোগী রাজপথাদির অস্তিত্বের বিষয়ও উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন। পথে দুরত্ব-জ্ঞাপক খোদিত-প্রস্তর প্রোথিত ছিল ; কোনও কোনও পথের দুই পার্শ্বে বৃক্ষশ্রেণী রোপিত হইয়াছিল ; স্থানে স্থানে পান্থশালা ও কুপাদি খনন করাইয়া দেওয়া হইয়াছিল। ভারতবর্ষের মধ্যে এবং ভারতবর্ষের বাহিরে উভয়ত্রই বহুকাল পূৰ্ব্ব হইতে এইরূপ রাজপথাদির অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। অধ্যাপক হীরেণও এ বিষয়ের উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন। কেবল হিন্দু-নৃপতিগণই যে বিভিন্ন দেশে গতিবিধির জন্য পথ-নিৰ্ম্মাণ করিতেন, তাহা নহে । রাজ সলোমনও, আপন য়িহুদী প্রজাবর্গের বাণিজ্য-সৌকর্ষার্থ এইরূপ রাজপথ প্রস্তুত করাইয়া দিয়াছিলেন। তাদমোর (পামির' ), বালবেকৃ { হেলিওপোলিস্ ), হামাৎ ( এপিফানিয়া ) প্রভূতি পল্লীতে রাজা সলোমন বণিকদিগের জন্য বিশ্রাম-স্থান নিৰ্ম্মাণ করাইয় দেন। তাহার ফলে, মেসোপোটামিয়াপ্রদেশে বাবিলন, টেসিফন, সেলেউসিয়া, ওসিস প্রভৃতি বাণিজ্য-কেন্দ্রসমূহ উদ্ভূত হইয়াছিল। সমুদ্র-পথে বাণিজ্য-পোতাদির গমনাগমনের সুবিধার প্রতিও সলোমনের দৃষ্টি ছিল ; তিনি সমুদ্র-পথে ও নানা স্থানে প্রহরীর বন্দোবস্ত করিয়াছিলেন । এবম্বিধ সুবিধা সূত্রেও, ভারতের বাণিজ্য দিকে দিকে বিস্তৃত হইয়া পড়িয়াছিল । যে কারণেই হউক, অতি-পুরাকালে পৃথিবীর এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত সৰ্ব্বত্র ভারতের বাণিজ্য-প্রভাব বিস্তৃত ছিল। বেদে যখন বাণিজ্য-প্রসঙ্গ দেখি, সমুদ্র-যাত্রার বর্ণনা anawong, পাঠ করি, তখন অতি-দুর অতীত-কালে ভারতের বাণিজ্য-প্রভাব উপলব্ধ বিভিন্ন দেশে হয়। বেদ—পৃথিবীর আদি ; সুতরাং আদিকাল হইতে ভারতবর্ষের বাণিজ্য । বাণিজ্য সৰ্ব্বত্র প্রতিষ্ঠিত ছিল বুঝিতে পারি। সে তুলনায়, ভারতের বাণিজ্যের মৌলিকত্বের নিকট সকল দেশের সকল গৰ্ব্ব খৰ্ব্ব হইয়া যায়। পুরাণাদি শাস্ত্র-গ্রন্থে ভারতীয় বণিকগণের বাণিজ্যের যে পরিচয়-চিহ্ন বিদ্যমান রহিয়াছে, তাহাতে বর্তমান কালের অন্ততঃ পাচ সহস্রাধিক বৎসর পূর্বের বিবরণ প্রাপ্ত হই। বর্তমান মশ্বস্তরের এই অষ্টাবিংশতিতম কলি-যুগের প্রারম্ভে অষ্টাদশ মহাপুরাণের প্রবর্তৃয়িত মহাকবি বেদব্যাসের আবির্ভাব-কাল স্মরণ করিলে এবং সেই সকল মহাপুরাণ-মধ্যে ভারতীয় বণিকগণের বৈদেশিক-বাণিজ্যের প্রসঙ্গ উত্থাপিত হইয়াছে দেখিলে, ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য কতকাল পূৰ্ব্বের, তাহ সহজেই প্রতীত হইতে পারে। কল্পনার অনধিগম্য সেই দুর অতীতের প্রসঙ্গ পরিত্যাগ করিয়া, আধুনিক প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য জাতির পুরাতত্ত্বের প্রতি দৃষ্টিপাত করিলেই বা কি দেখিতে পাওয়া যায় ? পালি-ভাষার প্রাচীন গ্রন্থসমূহের প্রতি লক্ষ্য করুন ; তামিল-ভাষার প্রাচীন গ্রন্থ-সমুহের অত্যন্তরে ৪র্থ ১ • 魏 #