পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য । Ե-> প্রতিষ্ঠিত হয় । অবশেষে আনাম উপকূলে, কাম্বোডিয়ার পশ্চিমে,র্তাহাদিগকে আশ্রয় লইতে হইয়াছিল। ৪৭২ পূৰ্ব্ব-খৃষ্টাব্দে চীনারা যখন ঔপনিবেশিকগণের প্রধান উপনিবেশ লঙ্গ’ অধিকার করিয়া লইয়। সেইস্থানে আপনাদের রাজধানী স্থাপন করেন, সেই সময়ে, রাজকীয় বিবরণীতে প্রকাশ, ঔপনিবেশিকগণের বাণিজ্য-তরণীর সাহায্যে চীনাদিগের ২৮ • • সৈন্ত তাহাদের নূতন রাজধানীতে সংবাহিত হইয়াছিল। লঙ্গ-উপনিবেশ পরিত্যাগের পর, যে কারণেই হউক, অৰ্দ্ধশতাব্দী কাল ভারতীয় বণিকগণকে বাণিজ্যের পথ পরিবর্তন করিতে হয়। তখন র্তাহারা মালাক্কা-প্রণালীর পথ পরিত্যাগ করিয়া, সুমাত্রা ও যবদ্বীপের দক্ষিণভাগ দিয়া, চীন-দেশে গতিবিধি করিতে আরস্ত করেন। সে সময়ে যে সকল পণ্য চীন-রাজ্যের দক্ষিণ-উপকূলে বিক্রীত হইত, তাহার অধিকাংশই ভারতের সামগ্ৰী। সে সময়ে চিনি ও মিছর একমাত্র ভারতের ইক্ষু হইতেই উৎপন্ন হইত। ভারতীয় বণিকগণ সেই চিনি, মিছরী ও ইক্ষু সৰ্ব্বপ্রথম, খৃষ্ট-পূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে, চীনদেশে লইয়া গিয়াছিলেন। ভারতমহাসাগর মুক্তার ও শুক্তির আকর। বণিকগণ ঐ সময়ে মুক্ত ও শুক্তি চীনদেশে লইয়া গিয়াছিলেন । উত্তর-ভারতের গণ্ডার ঐ সময় চীনে বিক্রীত হইত। তখন বাদাখানের পান্না, চুণী ও ‘আসবেক্টোস কাষ্ঠ সমুদ্র-পথে বণিকেরা চীনে বিক্রয়ার্থ লইয়। যাইতেন। চীন-দেশের রাজকীয় বিবরণীতে এবম্বিধ ভারতজাত দ্রব্যের নিদর্শন বিদ্যমান রহিয়াছে। খৃষ্টপূৰ্ব্ব চতুর্থ শতাব্দীর শেষভাগে (৩২৪-৩১০ পূৰ্ব্ব-খৃষ্টাব্দে ) ভারতের ঐ সকল পণ্যদ্রব্য চীনদেশে বিক্রীত হইত,—অধ্যাপক লাকুপেরি তাহ৷ সন্ধান করিয়া বাহির করিয়াছেন। খৃষ্ট-পূৰ্ব্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে লোহিত-সাগরের উপকুলভাগ হইতে পাশ্চাত্যদেশের বণিকগণ চীনদেশাভিমুখে গতিবিধি আরম্ভ করেন। ভারতীয় বণিকগণ তখন ‘হোপ শু ও কাটিগড়’ নামক বন্দরদ্বয়ে আপনাদের বাণিজ্য-কেন্দ্র স্থাপন করিয়াছিলেন। ঐ বন্দরদ্বয় চীন-সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হইলেও সেখানে চীনাদিগের পূর্ণ-প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে নাই। ঐ দুই বন্দরে দক্ষিণ-ভারতের বহু সুগন্ধ মশলা, ময়ূর, প্রবাল প্রভৃতির ব্যবসা চলিয়াছিল। ভারতের ময়ুর ইহার বহু পূৰ্ব্বে পাশ্চাত্য-দেশে রপ্তানি হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যাইলেও, চীনদেশে ময়ুর এই প্রথম আমদানি হইয়াছিল বলিয়। লাকুপেরি সিদ্ধান্ত করেন। এই সময়েই চীনের হৈনান দ্বীপের পশ্চিম-উপকূলে সৰ্ব্বপ্রথম মুক্তার আকর আবিষ্কৃত হইয়ছিল। শুক্তির ও মুক্তার উদ্ধারে পারদর্শী ভারতীয় নাবিকগণ, চীনদেশের সন্নিকটে সাগরে এই প্রথম যুক্তর আকর আবিষ্কার করেন। পরবৰ্ত্তিকালে ১১১ পূর্বখৃষ্টাব্দে চীন-সম্রাটের রাজধানীতে রাজকীয় উদ্যানে ভারতের বহু তরু-লত। রোপিত হইয়াছিল। ভারতের বণিকগণ সম্রাটকে সেই সকল সরবরাহ করিয়াছিলেন । ইহার পর একবার নানাবিধ উজ্জ্বল যুক্তা, সুদর্শন প্রস্তর এবং বিবিধ বর্ণের কাচ চীন-সম্রাটের দরবারে বণিকগণ উপহার প্রদান করিয়াছিলেন। সেই সকল উপহৃত সামগ্ৰী দেখিয়। ঔপনিবেশিকগণের নিকট ঐ সকল সামগ্ৰী সংগ্রহের জষ্ঠ সম্রাট তাহদের বন্দরে দূত প্রেরণ করেন। খৃষ্ট-জন্মের পরবত্তিকালে পূৰ্ব্বোক্ত ঔপনিবেশিক বণুিকগণের বিশেষ কোনও কৃতিত্বের পরিচয় পাওয়া যায় না। চীনদেশের একখানি প্রাচীন গ্রন্থে (ফুলাম-তু ৪র্থ ১১