পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৮৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& >v ভারতবর্ষ । দরবার হইতে ভারতবর্ষে বাণিজ্য-বিষয়ে অধিকার-লাভ ইংলণ্ডেশ্বরের সেই দূত প্রেরণের অভিপ্রায় ছিল । সেই দুত-প্রেরণের ফলে, বাঙ্গালায় ও বিহারে ইংরেজ বাণিজ্য-অধিকার প্রাপ্ত হন । ১৬২০খৃষ্টাব্দে পাটনা-সহরে ইংরেজের বাণিজ্য-কুঠী নিৰ্ম্মিত হয় । তখন প্রধানতঃ স্থলপথেই পাটনা হইতে আগ্রায় ও সুরাটে পণ্যাদি প্রেরিত হইত। কিন্তু তাহাতে ব্যবসায়ে বড় সুবিধা হয় না । সুতরাং বণিকগণ অন্যবিধ উপায় অন্বেষণ করিতে প্রবৃত্ত হন । ১৬৩৪ খৃষ্টাব্দের ২রা ফেব্রুয়ারী ইংরেজের বাঙ্গালায় বাণিজ্য করিবার জন্য সম্রাট সাজাহানের নিকট সনন্দ প্রাপ্ত হন । কিন্তু বাঙ্গালার সুবেদার আজিম খাঁ। ইংরেজদিগকে তখন গঙ্গানদীর উপকূলে বাণিজ্য-কুঠী স্থাপনে অনুমতি দেন না। পর্তুগীজের হুগলীতে কুঠ-নিৰ্ম্মানের অধিকার পাইয়া দেশ-মধ্যে যে বিপ্লববহ্নি প্রজ্জ্বলিত করিয়া দিয়াছিল, তদ্বিষয় স্মরণ করিয়াই তিনি ইংরেজদিগকে দেশাভ্যস্তরে wow, প্রবেশ করিতে অনুমতি দেন নাই। যাহ। হউক, ঐ সময় বালেশ্বরের ইংরেজ- নিকটস্থিত পিপলী-বন্দর পর্য্যন্ত ইংরেজ বাণিজ্য-পোত চলাচলের কি" অধিকার লাভ করিয়াছিলেন । ১৬৩৪ খৃষ্টাব্দে পিপলী-বন্দরে ইংরেজের খাণিজ্য-কুঠা প্রতিষ্ঠিত হয়। বাঙ্গালায় ঐ কুঠাই তাহদের প্রথম কুঠা। বলা বাহুল্য, পিপলীর কুঠ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায়, বাঙ্গালার বাণিজ্যে ইষ্ট ইণ্ডিয়। কোম্পানীর বিশেষ কোনও সুবিধা সংঘটিত হয় নাই। কিন্তু বিধাত সহায় হইলে সুবিধা আপনা-আপনিই উপস্থিত হয়। ১৬৩৮ খৃষ্টাব্দে সম্রাট সাজাহানের কন্যা অগ্নিদগ্ধ হন ;–হঠাৎ তাহার কাপড়ে আগুন লাগিয়া তিনি সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় পতিত হন। এই সময়ে সুরাট বন্দরে মিষ্টার গেব্ৰিয়েল বাউটন অবস্থিতি করিতেছিলেন । তিনি ‘হোপওয়েল’ নামক অর্ণবপোতের আরোহিগণের চিকিৎসক-রূপে এদেশে অসিয়াছিলেন । সম্রাট-কস্তার চিকিৎসার জন্য উঞ্জীর আসাদ খা ইউরোপীয় চিকিৎসকের সাহায্য-গ্রহণে পরামর্শ দিলেন । ফলে ডাক্তার বাউটনের প্রতি সম্রাটের দৃষ্টি পড়িল । সম্রাট সে সময়ে দাক্ষিণাত্যের শিবিরে অবস্থিতি করিতেছিলেন । সুতরাং সুরাট হইতে ডাক্তার বাউটনকে লইয়া গিয়া কন্যার চিকিৎসা করাইবার সুবিধা ঘটিল। ইংরেজের শুভগ্রহ ;-বাউটনের চিকিৎসায় অচিরে সম্রাট-মন্দিনী আরোগ্য লাভ করিলেন । বাউটন সম্রাটের প্রিয়পাত্র হইয়া দাড়াইলেন । সম্রাট তখন বাউটনকে পুরস্কার দিতে চাহিলেন। বাউটন কি পুরস্কার চাহেন ?-বাদসাহ প্রশ্ন asa, করিলেন। বাউটন ইচ্ছা করিলে বিপুল ধনৈশ্বর্ষ্যের অধিকারী হইতে স্বরাতি- পারিতেন। নিজের জন্য সাহায্য-প্রার্থী হইলে, তাহার অদৃষ্ট ফিরিয়া এঠি যাইত। কিন্তু বাউটন আপনার সুখ-সম্পদের প্রতি আদৌ দৃকপাত করিলেন না। কিসে জন্মভূমির ঐবৃদ্ধি সাধিত হয়, কিসে আপনার স্বজাতির উন্নতির পথ পঙ্কিত হয়, তিনি কেবল সেই দিকে দৃষ্টি রাখিয়া সম্রাটের নিকট পুরস্কার-প্রার্থী হইলেন। তিনি পুরস্কার চাহিলেন,–‘সম্রাট যেন বঙ্গদেশে তাহার স্বজাতির বাণিজ্যের পথ পরিষ্কার করিয়া দেন,—ইংরেজ যেন বিনা-গুল্কে বঙ্গদেশে বাণিজ্য-প্রসারে ও বাণিজ্য-কুঠা প্রতিষ্ঠায় অধিকারী হন। সেই প্রার্থনাই মঞ্জুর হুইল । বাউটনের প্রার্থনামুরূপ সনন্দ সম্রাট প্রদান