পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৯২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

እሢ8 ভারতবর্ষ। শক ) কৃষ্ট হয়। ঐ শক ৫৭ পূৰ্ব্ব-খৃষ্টাব্দে প্রবর্ধিত হইয়াছিল। প্রোক্ত খোদিতলিপির অধিকাংশই প্রশস্তি-মূলক অর্থাৎ রাজার যশোঘোষণায় ও মঙ্গল-কামনায় লিখিত। ঐ সকল লিপি-ফলকের কবিতার আলোচনায় বেশ বুঝিতে পারা যায়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ খৃষ্টীয় শতাব্দীর কবিতার রচনা-প্রণালী-প্রাচীনকালের কাব্যগ্রন্থের সহিত সম্পূর্ণ সাদৃশুমূলক, সুতরাং অভিন্ন । গুপ্তবংশীয় দ্বিতীয় নৃপতি সমুদ্রগুপ্ত চতুর্থ শতাব্দীর শেষার্দ্ধে বিদ্যমান ছিলেন । সমুদ্রগুপ্ত স্বয়ং কবিপ্রতিভাসম্পন্ন এবং কবিগণের আশ্রয়দাতা বলিয়া পরিচিত। র্তাহার অনুগ্রহ-প্রাপ্ত কবিগণের মধ্যে হরিসেনের নাম উল্লেখযোগ্য। কবি হরিসেন আপন আশ্রয়দাত নৃপতি-সম্বন্ধে প্রশস্তিমূলক একটী কবিতা ও কয়েক পংক্তি গদ্য লিপিবদ্ধ করেন। নয়ট শ্লোকে ত্রিশ চরণে কবিতাটি নিবদ্ধ। উহার গদ্ধাংশও ত্ৰিশ ছত্রে সন্নিবিষ্ট । ঐ কয়েক পংক্তি কবিতায় ও গদ্যে,হরিসেনে মহাকবি কালিদাসের এবং দণ্ডীর সমকক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায় । তাহার কবিতা কয়েক-পংক্তিতে সংস্কৃতছন্দের রীতি-পদ্ধতি যথাযথ অকুস্থত । তাহার গদ্য বহু যৌগিক পদবিশিষ্ট । তাহার এক একটা শব্দে বিংশত্যধিকশততম শব্দাংশ পর্য্যন্ত দেখিতে পাওয়া যায়। কিন্তু র্তাহার কবিতা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রভাবাপন্ন। তাহার ভাষা সরল ও সমস্তপদবিহীন । হরিসেন যে রচনা-পদ্ধতির অনুসরণ করিয়াছেন, খৃষ্টীয় তৃতীয় শতাব্দীতে বীরসেন কর্তৃক সেই পদ্ধতির অনুসরণ দেখিতে পাওয়া যায়। বীরসেন, সমুদ্রগুপ্তের উত্তরাধিকারী দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের সচিব-পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ৫২৯ মালব শকাব্দের ( ৪৭৩ খৃষ্টাব্দের ) আর এক খোদিত-লিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে । ইহাতে চতুশ্চত্বারিংশাধিক শ্লোকনিবদ্ধ পঞ্চাশদধিকশততম চরণবিশিষ্ট একটী কবিতা আছে। দাসপুরে ( মান্দাসর ) সূৰ্য্যদেবের মন্দির উৎসর্গ উদেখে কবি বৎসভট্টি কর্তৃক ঐ কবিত। লিখিত হইযাছিল । এই কবিতার আলোচনায় প্রতিপন্ন হয়, খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীতে ভারতের কাব্য-সাহিত্য বিশেষ সমৃদ্ধিসম্পন্ন ছিল। মহাকবি কালিদাসের রচনার সহিত এই কবিতার বিশেষ সাদৃশ্য আছে। এবম্বিধ সাদৃশ্য-দৃষ্টে মনে হয়, বৎসভট্টি মহাকবি কালিদাসের পরবত্তী লেখক ছিলেন এবং তিনি আপন রচনায় মহাকবির অকুসরণ করিয়াছিলেন। বৎসভট্টির ও কালিদাসের রচনার এই সাদৃশ্য-প্রসঙ্গে পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ কেহ কেহ অনুধাবন করেন, মহাকবি কালিদাস খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর প্রারম্ভে দ্বিতীয় বিক্রমাদিত্যঅভিধেয় চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকালে বিদ্যমান ছিলেন। গুপ্তরাজগণের রাজত্বকালে প্রচারিত প্রোক্ত লিপি-সমূহ ভিন্ন, গির্ণরে এবং নাসিকে দুইটী খোদিত লিপি প্রাপ্ত হওয়া যায়। ঐ দুই লিপি দ্বিতীয় শতাব্দীর গদ্য-কাব্যের নিদর্শন। পৌরাণিক কথা-সাহিত্যের ও রমন্যাসের সহিত ঐ রচনার সাদৃশ্য দেখা যায়। ঐ গদ্য-রচনার মধ্যে যেমন বড় বড় যৌগিক শব্দের সমাবেশ আছে, তেমনই অনুপ্রাস, অলঙ্কার, উপমা, ছন্দ প্রভূতিতে উহা মুশোভিত । ঐ রচনা হরিসেনের রচনার ন্যায় যৌগিক শব্দাড়ম্বরপূর্ণ মহে ; পরস্তু দণ্ডী, জুবন্ধু, বাণ প্রভৃতির রচজার অপেক্ষ শব্দ-সম্পদ-বিশিষ্ট । গির্ণরের খোদিত-লিপি হইতে বেশ বুঝা যায়, ঐ গদ্যাংশের রচয়িতা কবিতা-রচনার নিয়ম-পদ্ধতি সম্পূর্ণরূপ অবগত ছিলেন ; এবং উহাতে আরও বুঝা যায়, ঐ সময়ে ও উহার পরবত্তিকালে রাজামুগুহাঁত কবিগণ