পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - দ্বিতীয় খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৌশল-রাজ্য । NA' আধিপত্যকালে, অযোধ্যার ভগ্নস্তুপ-সমূহ হইতে ইষ্টকাদি উপাদান সংগ্ৰহ করিয়া ফয়জবাদ নগরী বিনিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। ঐ নগরীর দৈর্ঘ্য আড়াই মাইল, প্ৰস্থ এক মাইল । অযোধ্যা এবং ফয়জাৰাদ পাশাপাশি অবস্থিত । উভয় নগরের পরিমাণ ফল-মোটের উপর ছয় বৰ্গ মাইল। অযোধ্যা-প্ৰদেশ মুসলমানগণের অধিকার-ভুক্ত হইলে, অযোধ্যাপ্রদেশের প্রথম প্ৰাদেশিক শাসনকৰ্ত্ত (নবাব ) ফয়জাবাদ নগরীতে আপনার রাজধানী প্ৰতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। রামায়ণে আভাষ পাই,--শ্ৰী রামচন্দ্রের জ্যেষ্ঠপুত্র, শ্রাবস্তী নগরে রাজধানী স্থাপন করিয়া উত্তর-কোশল রাজ্য শাসন করিতে আরম্ভ করেন ; আর শ্ৰীরামচন্দ্রের কনিষ্ঠ পুত্ৰ কুশ, কুশাবতী নগরে রাজধানী স্থাপন করিয়া দক্ষিণ-কোশল প্ৰদেশ অধিকার করিয়া • বসেন। রামায়ণে যদিও উত্তর-কৌশল এবং দক্ষিণকোশল-এই দুই নাম পৃথক ভাবে উল্লিখিত হয় নাই ; কিন্তু পরবৰ্ত্তিকালের গ্রন্থাবলীর আলোচনায় ঐ সময় হইতে দুইটী কোশল-রাজ্যের উদ্ভব হইয়াছিল, সহজেই প্ৰতিপন্ন হয়। মহাভারতের সভাপর্বে, ত্রিংশ অধ্যায়ে, উত্তর-কোশল নামের উল্লেখ আছে। রাজসূয়-যজ্ঞ উপলক্ষে পাণ্ডবগণ যে যে দেশে আপনাদের প্রভাব বিস্তার করেন, তন্মধ্যে উত্তর-কৌশলের নাম দৃষ্ট হয়। সেখানে লিখিত আছে,-“অনন্তর অরিন্দম বৃকোদার কুমার-রাজ্যের শ্রেণিমানকে এবং কোশলাধিপতি বৃহদ্বলকে জয় করিলেন। অযোধ্যার মহাবল ধৰ্ম্মজ্ঞ দীর্ঘযজ্ঞকে তিনি অনতিতীক্ষ কৰ্ম্ম-দ্বারায় পরাভূত করিলেন। তৎপরে সেই প্রভাব-সম্পন্ন পাণ্ডবশ্রেষ্ঠ, গোপালকক্ষ, উত্তর-কোশল ও মল্লাদিগের অধিপতি পার্থিবিকেও পরাভূত করিলেন। অনন্তর হিমালয়ের পাশ্বে উপনীত হইয়া, অতি অল্পকালের মধ্যে সমুদায় জলোদ্ভব দেশ স্ববশে আনয়ন করিলেন।” এই অংশের আলোচনায় “প্ৰতীত হয়,-উত্তর-কোশল রাজ্য তখন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নানা ভাগে বিভক্ত হইয়া পড়িয়াছিল। বৃহদ্বল-কৌশলের অধিপতি ছিলেন ; দীর্ঘযজ্ঞ অযোধ্যায় রাজত্ব করিতেন ; এবং তদ্ভিন্ন উত্তর-কোশল নামে আর এক নুতন জনপদ ছিল। লবের রাজত্বকালে ‘উত্তর-কোশল” বলিতে যে অংশ বুঝাইত, এতদ্বারা যদিও সে অর্থ সুচিত হয় না, তথাপি ভারতবর্ষের উত্তরাংশে উত্তর-কোশল নামে এক অভিনব জনপদের অস্তিত্ব সহজেই প্ৰতিপন্ন হয়। ইহার পর, মহাভারতের উক্ত সভাপর্বের অপর এক অধ্যায়ে ( একত্রিংশ অধ্যায়ে ) আর এক কৌশলের নাম দৃষ্ট হয়। যদিও ‘পুৰ্ব্ব-কোশল” নামে সেই কোশল অভিহিত হইয়াছে ; কিন্তু তাহা যে দক্ষিণ-স্থিত কোশল, তদ্বিষীয় সন্দেহ নাই। পাণ্ডবগণের রাজধানী হস্তিনাপুরের পূর্ব-দক্ষিণাংশে সে কোশল-রাজ্য অবস্থিত হইলেও তাহা যে উত্তর-কৌশলের দক্ষিণে বিদ্যমান ছিল, তাহাতে অণুমাত্র সংশয় হয় না। সহদেব মহতী সেনাসমভিব্যাহারে দক্ষিণ দিকে যাত্ৰা করিয়াছিলেন,-মহাভারতে লিখিত আছে। সেই দক্ষিণ-দিকস্থিত অবন্তী প্ৰভৃতি রাজ্যে আপনাদের আধিপত্য বিস্তার করিয়া, সহদেব ‘কোশলাধিপতি বেশ্বাতটের অধীশ্বর কাস্তারবর্গ ও পুৰ্ব্ব-কোশলস্থ সমুদায় নরপতিকে পয়াজিত করেন।” ইহাতে আরও কত কথাই মনে আসিতে পারে। উত্তর-কোশল যেমন বহু R \O দক্ষিণ কোশল ।