পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - দ্বিতীয় খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

하-35 || ՏՀ (* আদিকাল হইতে প্ৰয়াগ যে মুক্তি প্ৰদ তীর্থক্ষেত্র মধ্যে পরিগণিত ছিল, তাহা বলাই বাহুল্য। এই প্ৰয়াগ তীর্থের মাহাত্ম্য শাস্ত্ৰাদিতে পুনঃপুনঃ উক্ত হইয়াছে। “ রামায়ণে প্ৰয়াগ তীর্থের ও প্রাগবটের উল্লেখ আছে। প্ৰয়াগে ভরদ্বাজা শ্রম, প্ৰয়াগে গঙ্গাযমুনাসঙ্গম,-অযোধ্যা-কাণ্ডে চতুঃপঞ্চাশাৎ সর্গে দেখিতে পাই। সেখানে শ্ৰীরামচন্দ্ৰ লক্ষ্মণকে বলিতেছেন,-“সৌমিত্রে !! ঐ দেখ, প্ৰয়াগ তীর্থের চতুর্দিক হইতে ভগবান অগ্নির কেতুস্বরূপ ধূম উখিত হইতেছে। বোধ করি, মুনি সন্নিহিত হইয়াছেন। নিশ্চয়ই আমরা গঙ্গা ও যমুনা নদীর সঙ্গম-স্থানে আসিয়াছি। কেন-না, দ্বিবিধ জলের সংঘর্ষে সমুখিত শব্দ আমাদিগের কর্ণগোচর হইতেছে।” সুৰ্য্য অস্তগমন করিতে উদ্যত হইলে, সেই ধনুৰ্দ্ধারীশ্ৰেষ্ঠ রাম ও লক্ষ্মণ সুখে যাইয়া গঙ্গা ও যমুনা নদীর সঙ্গম প্ৰদেশস্থ ভরদ্বাজ মুনির আশ্রমে উপনীত হইলেন। এতৎ প্রসঙ্গে রামায়ণের সমসময়ে, গঙ্গাযমুনার সঙ্গমস্থলে প্ৰয়াগ ও ভরদ্বাজা শ্রমের অস্তিত্ব প্ৰতিপন্ন হয়। কিন্তু উহা যে তখন কোনও রাজার রাজধানী ছিল, তাহা বুঝিতে পারা যায় না। সুতরাং প্রতিষ্ঠান রাজধানী লোপ পাইলে, ঐ প্রদেশ কোশল রাজ্যেরই অপ্তভুক্ত হইয়াছিল, মনে করিতে পারি। প্ৰাগাৰটের উল্লেখ রামায়ণের অযোধ্যা কাণ্ডে একসপ্ততিতম সর্গে দেখিতে পাই। মাতুলালয় হইতে প্ৰত্যাবৰ্ত্তন-কালে ভরত প্ৰাগবিট নগরে গঙ্গা পার হইয়াছিলেন। প্ৰয়াগই যে প্ৰাগবিট নগর নামে সেখানে অভিহিত, তাহা বেশ উপলব্ধি হয়। পরবৰ্ত্তিকালে যাহা ‘অক্ষয় বট” নামে সম্পূজিত, রামায়ণের সময় তাহৰ প্ৰাগবিট নামে অভিহিত ছিল এবং প্ৰাগবিটের নামানুসারেই প্ৰাগবিট নগরের নামকরণ হইয়াছিল,-এরূপ সিদ্ধান্ত করা যাইতে পারে। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পর আত্মীয় স্বজনের বিনাশ-জনিত শোকে যুধিষ্ঠির যখন মুহমান, প্ৰয়াগ-মাহাত্ম্য কীৰ্ত্তন-ব্যাপদেশে মাকণ্ডেয় ঋষি বলিতেছেন,-“হে নিরাধিপ ! তোমার যদি অল্পমাত্রও পাপ হইয়া থাকে, প্রয়োগ তীর্থের স্মরণে তাহা ক্ষয় হইবে। প্ৰয়াগ তীর্থের দর্শন, নাম কীৰ্ত্তন বা মৃত্তিকা গোপনে নর। পাপমুক্ত হয়।” প্ৰয়াগ মহারাজ দুৰ্য্যোধনের রাজ্যান্তভুক্ত ছিল। দুৰ্য্যোধনকে যুধিষ্ঠির সুযোধন বলিয়া সম্বোধন করিতেন। ভ্ৰাতৃশোকে সন্তপ্ত হইয়া, প্ৰয়াগের কথা স্মরণ পুৰ্ব্বক, যুধিষ্ঠির এক দিন মনে মনে অনুতাপ করিতেছিলেন,-“হায়! একদা সুযোধন এই রাজ্যের রাজা ছিল। সে একাদশ অক্ষেীহিণীর অধীশ্বর ছিল । আমাদিগকে বহুধা সন্তাপিত করিলে পরিশেষে আপনি আত্মীয়স্বজন-সহ নিধনপ্রাপ্ত হইল।” মৎস্যপুরাণে ও কুৰ্ম্মপুরাণে যুধিষ্ঠিরের এই শোকবাক্য দৃষ্ট হয়। ইহার পর হইতেই প্ৰয়াগ পাণ্ডবগণের রাজ্যান্তভুক্ত হইয়াছিল। ভারতবর্ষের অন্যান্য প্ৰসিদ্ধ স্থানসমূহের ন্যায় প্ৰয়াগে এক সময়ে বৌদ্ধপ্রাধান্য বিস্তৃত হইয়াছিল। প্ৰয়াগে, বৰ্ত্তমান দুর্গের অভ্যন্তরে, একটা ধাতুনিৰ্ম্মিত স্তম্ভ ( লাট) বিদ্যমান রহিয়াছে। ঐ দেশ এক সময়ে রাজা অশোকের (প্রিয়দর্শীর) রাজ্যান্তিভুক্তি ছিল, স্তম্ভ তাহারই পরিচয় প্ৰদান করিতেছে। বৌদ্ধধৰ্ম্মের নীতিতত্ত্ব এবং উপদেশপরম্পরা ঐ স্তন্তে খোদিত রহিয়াছে। অশোকের পরবৰ্ত্তিকালে প্ৰয়াগ গুপ্তরাজ-বংশের অধিকারভুক্ত হয় । গুপ্তবংশীয় রাজা সমুদ্রগুপ্ত অশোকের cr:Cs 2tty