পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - প্রথম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেদ-চতুষ্টয় | ২৯ যাহার। জগদীশ্বরকে জগন্ময়-রূপে প্রত্যক্ষ করিতে পারেন ; শব্দ ব্ৰহ্ম র্যাহাদের শাস্ত্রে পুনঃপুনঃ প্রমাণিত হইয়া আছে, তাহার। সংসারের আদি-বাণী বেদকে ব্ৰহ্ম-বাক্য ভিন্ন আর কি ৰলিতে পারেন । মহৰ্ষি জৈমিনি আপন মীমাংসা-স্থত্রের প্রমাণ-পাদে তাই বিচার করিয়! দেখাইয়াছেন,--বৈদিকু মন্ত্রাদির সঙ্কেত-কৰ্ত্তার নির্দেশ হয় না ; সুতরাং উহা যে মন্থন্স-রচিত, তাহ কোনক্রমেই বলা যায় না। সাম্বাকার কপিল নানারূপ তর্ক-বিতর্ক উত্থাপন করিয়া এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেল—‘বেদ অনন্তকাল বিদ্যমান আছে। কল্পাস্তে ব্ৰহ্মা উহ। প্রকাশ করেন মাত্র । জাগরণের পর স্বপ্তোথিত ৰাক্তির পূৰ্ব্ব-স্থতি যেরূপ অব্যাহত থাকে, কল্পাস্তুে বেদও সেইরূপ প্রকাশমান হয় । মধু প্রভৃতিও এই মতেরই সমর্থনকারী । যাহা হউক, যখন বেদের রচয়িতাকে মনুষ্য-বুদ্ধির অমুসন্ধানে পাওয়া যায় না, বেদের রচনাকালেরও যখন সময়-নির্দেশ হয় না. বেদ অনাদি অপৌরুষেয় ব্রহ্মবাক্য ভিন্ন উহাকে আর কি বলা যাইতে পারে ? ফলত, ভিন্ন ভিন্ন আকারে, অধিকারিভেদে উপাসনার পদ্ধতিরূপে, স্থষ্টির মাদিকাল হইতে যে সকল স্তোত্র সংসারে চলিয়া আসিতেছিল, পরবর্তী ঋষিগণ আবশ্যক মুসারে ষাহ সংগ্ৰহ করিয়া সংসারে প্রচলিত রাখিয়াছিলেন ; তাহাই এখন সেই সেই ঋষি-প্রণীত স্বত্ত বা মন্ত্র বা সংহিতা নামে অভিহিত,--তাহাই এখন বেদ নামে পরিচিত্র । বেদ-অনাদি । বেদ-অনন্তকাল হইতে বিরাজমান। শাস্ত্রানুশাসন-পরিচালিত হিন্দুমাত্রেরই এই বিশ্বাস। পুরাণাদির বর্ণনায় দেখা যায়,--“প্রজাপতি ব্ৰহ্মার চতুর্মুখ হইতে বেদ-চতুষ্টয়ের উৎপত্তি হইয়াছিল। স্বষ্টিকৰ্ত্ত। ব্রহ্মার মুখ-নিঃস্থত বা ক্যই বেদ ।” * মমু বলেন,-“স্বয়ং ঈশ্বর যজ্ঞকার্য্যের জন্য অগ্নি হইতে ঋগ্বেদ, বায়ু হইতে ফুজুৰ্ব্বেদ, এবং স্বৰ্য্য হইতে সামবেদ দোহন করিলেন । এই বেদত্ৰয় সনাতন (" + এই সকল শাস্ত্রমত মান্ত করিলে, বেদের সময় নিরূপণ করিতে যাওয়া বিড়ম্বন মাত্র । তবে সকলের জ্ঞান-বুদ্ধি-শিক্ষা সমান নহে । সুতরাং তৎসম্বন্ধে মতামত-প্রকাশেও বড় ক্রটি দেখিতে পাই না । হিন্দুগণ বেদকে সনাতন বলিয়। মাগু করিলেও, পাশ্চাত্য-শিক্ষিত পণ্ডিতগণ কিন্তু তাহ স্বীকার করেন না । সুতরাং বেজের সময়-নিরূপণ জন্য নানা জনের নানারূপ মস্তিষ্ক-চালনা দেখিতে পাই । তবে ফিনিই এ সম্বন্ধে যতই মস্তিষ্ক আলোড়ন করুন না কেম, সকলেই যে অন্ধকারে ঘূরিয়া বেড়াইতেছেন, তাহ বলাই বাহুল্য। অধিক বলিব কি, বেদের সময়-নিৰ্দ্ধারণে এ পর্যন্ত কেহই এক মত হইতে পারেন নাই। প্রায় সকলেই বেদকে পৃথিবীর আদি-গ্রন্থ বলিয়া স্বীকার করিয়াছেন বটে ; কিন্তু অনেকেই খৃঃ-জন্মের দুই সহস্রাধিক বৎসরের অধিক পূৰ্ব্বে বেদের স্বষ্টি হইয়াছিল বলিয়া ধারণা করিতে পারেন নাই । কেহ কেহ বলিয়া থাকেন,-“২৭৮• পূর্ব-খৃষ্টাঙ্গ হইতে ১৮২০ পূৰ্ব্ব-খৃষ্টাব্দের মধ্যে বেদগ্রন্থ সঙ্কলিত হইয়াছিল এবং ৪৫ •• পূৰ্ব্ব-খৃষ্টান্ধ হইতে ২৫• • পূৰ্ব্ব-খৃষ্টাব্দ পর্য্যস্ত সময়কে বৈদিক বেদ কত কালের ?

  • বিষ্ণুপুরাণ এবং অন্যান্ত পুরাণ দ্রষ্টব্য। + ষমুসংহিতা, প্রথম অধ্যায়, ২৩শ শ্লোক ।