পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - প্রথম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8૦ ভারতবর্ষ। কিন্তু আৰ্য-হিন্দুগণ পূৰ্ত্তকার্য্যে কিরূপ সুদক্ষ ছিলেন--সহস্রস্তম্ভযুক্ত বিশাল অট্টালিকার প্রসঙ্গে ঋগ্বেদের দ্বিতীয় ও পঞ্চম মণ্ডলে তাহার প্রমাণ পাওয়া যায়। পূৰ্ব্বে প্রতিপন্ন করিয়াছি,—মিশরের সভ্যতার কত কোটি-কল্প বৎসর পূৰ্ব্বে ঋগ্বেদ প্রচলিত ছিল। সেই ঋগ্বেদে যখন এতাদৃশ অট্টালিকার প্রসঙ্গ উত্থাপিত আছে, তখন বিচার করিয়া দেখুন, আদিকালেও আধ্য-হিন্দুগণ পূৰ্ত্তকাৰ্য্যে কাশ পারদর্শী ছিলেন। অধুনাতন সভ্য-জাতিমাত্রেরই মত,—“পৃথিবী দিন দিন সভ্যতার পথে অগ্রসর হইতেছে।” সেই মত সম্বর্থনের ব্যপদেশে তাহারা পৃথিবীর আদিম অধিবাসীদিগের সভ্যতার নানা স্তর নির্দেশ করিয়৷ থাকেন । আদিম জাতিগণ প্রথমে অস্ত্রশস্ত্র ও অগ্নির ব্যবহার করিতে জানিত না, তাহার। অাম-মাংস ও অপরিপক্ক দ্রব্যাদি ভক্ষণ করিয়া জীবন-যাপন করিত, গিরিগুহা ও বৃক্ষ-কোটর প্রভৃতি তাহীদের আবাস-স্থান মধ্যে পরিগণিত ছিল ; পরে ক্রমশঃ ধাতব পদার্থ অস্ত্ৰ-শস্ত্রাদি ব্যবহার করিতে তাহারা অভ্যস্ত হয় এবং ধীরে ধীরে পূর্ব অভ্যাস পরিত্যাগ করে। কিন্তু হিন্দু-শাস্ত্রের মত—উহার সম্পূর্ণ বিরোধী। শাস্ত্রের মতে,—মনুষ্য প্রথমে সত্য-সমুন্নত ছিল ; সত্য-ত্রেতা-দ্বাপর-কলি প্রভৃতি যুগ-বিবৰ্ত্তনে দিন দিনই তাহাদের অধঃপতন সাধিত হইতেছে। অন্ত দেশের ও ভারতবর্ষের প্রাচীন ইতিহাস তুলনা করিলে, আপাতঃ-দৃষ্টিতে উভয় সিদ্ধান্তই প্রমাদশূন্ত বলিয়। মনে হইতে পারে। ভারতবর্ষ ভিন্ন অল্প দেশে প্রথমে অসত্য বধবর জাতির বসতি ছিল,—তত্ত্বদেশের প্রত্নতত্ত্বানুসন্ধিৎসুগণ তাঁহাই অনুসন্ধান করিয়া পাইয়াছেন । কিন্তু ভারতবর্ষের ইতিহাসে ভারতবর্ষ আদিকাল হইতেই সভ্যসমুন্নত বলিয়া কীৰ্ত্তি হইয়াছে । সুতরাং, উভয় দেশের সিদ্ধান্তে মতদ্বৈধ ঘটিবে,— তাহাতে আর অtশ্চর্য্য কি ? যাহা হউক, যখন ভারতবর্ষের কথাই কহিতেছি ;– আর্য্য-হিন্দুগণের ইতিহাস আলোচনায় ব্রতী হইয়াছি ; তখন র্তাহাদের আচার-ব্যবহার প্রভূতির ষে পরিচয় তাহদের গ্রন্থপত্রে পাওয়া যায়, তাহার আলোচনায়, তাহীদের সিদ্ধান্তই সমীচীন বলিয়া প্রতিপন্ন হয় । সে সিদ্ধাস্তে, আদিকালে আর্য্য-হিন্দুগণ সভ্যতার উচ্চ সোপানে সমারূঢ় ছিলেন, পরবর্তি-কালে ক্রমশঃ তাহাদের অধঃপতন সাধিত হইয়াছে,—ইহাই বুঝিতে পারা যায় । আর্য্য-হিন্দুগণের সমাজ-ধৰ্ম্মের বিষয় আলোচনা করিতে গেলে, জাতি-বর্ণের কথা না বলিলে সে আলোচনা অসম্পূর্ণ রহিল বলিয়। মনে হয়। তাহাদের জাতিবর্ণের প্রসঙ্গ লইর বহু দিন হইতেই দ্বন্দ্ব চলিয়া আসিতেছে। শাস্ত্রায়ুশাসন পরিবেদে জাতিভেদ । চালিত হিন্দুগণের মত,—“জাতি-বর্ণ-ভেদ সৃষ্টির আদিকাল হইতেই g অব্যাহত আছে ; উহা সৰ্ব্বথ বেদ-বিহিত ।” তৎপক্ষে তাহার বেদ হইতে প্রমাণ উদ্ধার করিতেও ক্রটি করেন না । এ দিকে কিন্তু দেখিতে পাই,—অন্য পক্ষ বলেন,—“বেদে জাতিভেদ নাই ; স্বষ্টির আদি-কালেও জাতিভেদ ছিল না ; উহ ব্রাহ্মণগণের গুঢ় উদ্দেশু-সিদ্ধির কল্পনা মাত্র।” যখন এতাদৃশ মতদ্বৈধ, তখন দেখা উচিত নহে কি-বেদে জাতি-বর্ণের বিষয় বাস্তবিক কিছু আছে কি না ? অথবা, জাতিব বিজ্ঞান-সন্মত কি না ? এ বিষয়ে ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলে মীমাংস আছে। প্রথমে প্র: