পাতা:পোকা-মাকড়.pdf/২১৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কাঁচ-পোকা
১৯৭

 ইহারা কি রকমে আরসুলা শিকার করে তোমরা দেখ নাই কি? আরসুলার মত বড় প্রাণীকে কাঁচ-পোকারা জব্দ করিয়া ছাড়ে। একটা ছোট কাঁচ-পোকা প্রকাণ্ড আরসুলাকে শুঁয়ো ধরিয়া হিড়্ হিড়্ করিয়া টানিতেছে ইহা প্রায়ই দেখা যায়। তখন আরসুলা বেচারা দড়ায়-বাঁধা শান্ত গোরুর মত কাঁচ-পোকার পিছনে পিছনে চলে। ইহা দেখিলে সত্যই হাসি পায় এবং দুঃখও হয়। নিজেকে রক্ষা করিবার জন্য আরসুলার হুল নাই, দাঁতে বিষ নাই, কেবল ছয়খানা পায়ে করাতের মত দাঁত লাগানো থাকে। আরসুলা দেখিলেই চতুর কাঁচ-পোকা তাহার পিঠে চড়িয়া বসে এবং হুল বাহির করিয়া তাহার গলার কাছে স্নায়ু-কেন্দ্রে খোঁচা দিতে থাকে। স্নায়ু-কেন্দ্রই প্রাণীদের বুদ্ধি-বিবেচনা ও চলা-ফেরার যন্ত্র। হুলের খোঁচায় তাহা নষ্ট হইয়া গেলে, আরসুলার অঙ্গ অবশ হইয়া পড়ে এবং সে বুদ্ধি-বিবেচনা হারায়। কাজেই তখন ছোট কাঁচ-পোকা আারসুলার গোঁফ ধরিয়া যেখানে ইচ্ছা টানিয়া লইতে পারে।

 কাঁচ-পোকারা এই রকমে যে-সকল আরসুলা বা মাকড়সা শিকার করে, তাহা উহারা নিজে প্রায়ই খায় না। আধ-মরা শিকারগুলিকে বাসায় রাখিয়া সেখানে ডিম পাড়ে। ডিম হইতে বাচ্চা বাহির হইয়া ঐ-সকল শিকারকে খাইয়া শীঘ্র শীঘ্র বড় হয়। পুরুষ কাঁচ-পোকাদের পিছনে হুল থাকে না। ইহারা নিরীহ প্রাণী। স্ত্রীরাই পোকা-মাকড় শিকার করিয়া বেড়ায়।