পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
প্রজাপতি নির্ব্বন্ধ।

হয় কে আমার কাছে কি খবর পাঠালে গো! শুভ্র একটি হংসদূত কোন বিরহিনীর হয়ে এই চিরবিরহীর কানে কানে বলচে―

অলিন্দে কালিন্দীকমল সুরভৌ কুঞ্জবসতের্
বসন্তীং বাসন্তীনবপরিমলোদ্গার চিকুরাং।
ত্বদুৎসঙ্গে লীনাং মদমুকুলিতাক্ষীং পুনরিমাং
কদাহং সেবিষ্যে কিসলয় কলাপব্যজনিনী!

 শ্রীশ। বেশ বেশ রসিক বাবু, চমৎকার। কিন্তু ওর মানেটা বলে দিতে হবে। ছন্দের ভিতর দিয়ে ওর রসের গন্ধটা পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু অনুস্বার বিসর্গ দিয়ে একেবারে এঁটে বন্ধ করে রেখেছে।

 রসিক। বাঙ্‌লায় একটা তর্জ্জমাও করেছি—পাছে সম্পাদকরা খবর পেয়ে হুড়াহুড়ি লাগিয়ে দেয়, তাই লুকিয়ে রেখেছি—শুন্‌বেন শ্রীশ বাবু?

কুঞ্জ কুটীরের স্নিগ্ধ অলিন্দের পর
কালিন্দীকমলগন্ধ ছুটীবে সুন্দর;
লীনা রবে মদিরাক্ষী তব অঙ্কতলে,
বহিবে বাসন্তীবাস ব্যাকুল কুন্তলে।
তাহারে করিব সেবা, কবে হবে হায়,
কিসলয় পাখা খানি দোলাইব গায়?

 শ্রীশ। বা, বা, রসিক বাবু আপনার মধ্যে এত আছে তা ত জানতুম না।

 রসিক। কি করে জান্‌বেন বলুন। কাব্যলক্ষ্মী যে তাঁর পদ্মবন থেকে মাঝে মাঝে এই টাকের উপরে খোলা হাওয়া খেতে আসেন এ কেউ সন্দেহ করে না। (হাত বুলাইয়া) কিন্তু এমন ফাঁকা জায়গা আর নেই!

 শ্রীশ। আহাহা রসিক বাবু, যমুনাতীরে সেই স্নিগ্ধ অলিন্দওয়ালা