রসিক। প্রেমের বাজারে বড় মহাজনী করবার মূলধন আমার নেই— আমি খুচরো মালের কারবারী―রুমালটা, চুলের দড়িটা, ছেঁড়া কাগজে দুচারটে হাতের অক্ষর এই সমস্ত কুড়িয়ে বাড়িয়েই আমাকে সন্তুষ্ট থাক্তে হয়। শ্রীশবাবুর যে রকম মূলধন আছে তাতে উনি বাজার সুদ্ধ পাইকেরি দরে কিনে নিতে পারেন―রুমাল কেন সমস্ত নীলাঞ্চলে অর্দ্ধেক ভাগ বসাতে পারেন; আমরা যেখানে চুলের দড়ি গলায় জড়িয়ে মরতে ইচ্ছে করি উনি যে সেখানে আগুল্ফবিলম্বিত চিকুররাশির সুগন্ধ ঘনান্ধকারের মধ্যে সম্পূর্ণ অস্ত যেতে পারেন। উনি উঞ্ছবৃত্তি করতে আসেন কেন?
শ্রীশ। অবলাকান্ত বাবু, আপনি ত নিরপেক্ষ ব্যক্তি, রুমালখানা এখন আপনার হাতেই থাক্, উভয় পক্ষের বক্ত্তৃতা শেষ হয়ে গেলে বিচারে যার প্রাপ্য হয় তাকেই দেবেন।
শৈল। (রুমালখানি পকেটে পুরিয়া) আমাকে আপনি নিরপেক্ষ লোক মনে করচেন বুঝি? এই কোণে যেমন একটি ন অক্ষর লাল সুতোয় সেলাই করা আছে আমার হৃদয়ের একটি কোণে খুঁজলে দেখতে পাবেন ঐ অক্ষরটি রক্তের বর্ণে লেখা আছে। এ রুমাল আমি আপনাদের কাউকেই দেব না।
শ্রীশ। রসিক বাবু এ কি রকম জবর্দস্তি? আর, ন অক্ষরটিও ত বড় ভয়ানক অক্ষর!
রসিক। শুনেছি বিলিতী শাস্ত্রে ন্যায়ধর্ম্মও অন্ধ, ভালবাসাও অন্ধ, এখন দুই অন্ধে লড়াই হোক্, যার বল বেশী তারই জিত হবে।
শৈল। শ্রীশ বাবু, যার রুমাল আপনি ত তাকে দেখেন নি, তবে কেন কেবলমাত্র কল্পনার উপর নির্ভর করে ঝগড়া করচেন।
ঐশ। দেখিনি কে বল্লে?
শৈল। দেখেছেন? কাকে দেখলেন। ন ত দুটি আছে―