পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
১০৫

 শ্রীশ। দুটিই দেখেছি― তা এ রুমাল দুজনের যাঁরই হোক্, দাবী আমি পরিত্যাগ করতে পারব না।

 রসিক। শ্রীশ বাবু বৃদ্ধের পরামর্শ শুনুন, হৃদয়গগনে দুই চন্দ্রের আয়োজন করবেন না, একশ্চন্দ্রস্তমোহন্তি।

ভৃত্যের প্রবেশ।

 ভৃত্য। (শ্রীশের প্রতি) চন্দ্র বাবুর চিঠি নিয়ে একটি লোক আপনার বাড়ি খুঁজে শেষকালে এখানে এসেছে।

 শ্রীশ। (চিঠি পড়িয়া) একটু অপেক্ষা করবেন? চন্দ্র বাবুর বাড়ি কাছেই—আমি একবার চট্ করে দেখা করে আসব।

 শৈল। পালাবেন না ত?

 শ্রীশ। না, আমার রুমাল বন্ধক রইল, ওখানা খালাস না করে যাচ্চিনে।

(প্রস্থান)

 রসিক। ভাই শৈল, কুমারসভার সভ্যগুলিকে যে রকম ভয়ঙ্কর কুমার ঠাউরেছিলুম তার কিছুই নয়। এদের তপস্যা ভঙ্গ করতে মেনকা রম্ভা মদন বসন্ত কারো দরকার হয় না, এই বুড়ো রসিকই পারে।

 শৈল। তাই ত দেখছি।

 রসিক। আসল কথাটা কি জান? যিনি দার্জ্জিলেঙে থাকেন তিনি ম্যালেরিয়ার দেশে পা বাড়াবামাত্রই রোগে চেপে ধরে। এঁরা এতকাল চন্দ্র বাবুর বাসায় বড্ড নীরোগ জায়গায় ছিলেন, এই বাড়িটি যে রোগের বীজেভরা; এখানকার রুমালে, বইয়ে, চৌকিতে, টেবিলে যেখানে স্পর্শ করচেন সেইখান থেকেই একেবারে নাকে মুখে রোগ ঢুক্‌চে―আহা, শ্রীশ বাবুটি গেল।

 শৈল। রসিক দাদা, তোমার বুঝি রোগের বীজ অভ্যেস হয়ে গেছে?