নীর আসিয়াই শৈলকে জড়াইয়া ধরিয়া জিজ্ঞাসা করিল—মেজদিদি ভাই, আজ কারা আস্বে বল ত?
নৃপ। মুখুজ্জেমশায় আজ কি তোমার বন্ধুদের নিমন্ত্রণ আছে? জলখাবারের আয়োজন হচ্চে কেন?
অক্ষয়। ঐত! বই পড়ে পড়ে চোক কানা করলে—পৃথিবীর আকর্ষণে উল্কাপাত কি করে ঘটে সে সমস্ত লাখ দুলাখ ক্রোশের খবর রাখ, আর আজ ১৮ নম্বর মধুমিস্ত্রির গলিতে কার আকর্ষণে কে এসে পড়চে সেটা অনুমান করতেও পারলে না?
নীর। বুঝেছি ভাই, সেজদিদি!—বলিয়া নৃপর পিঠে একটা চাপড় মারিল এবং তাহার কানের কাছে মুখ রাখিয়া অল্প একটু গলা নামাইয়া কহিল—তোর বর আস্চে ভাই, তাই সকালবেলা আমার বাঁ চোখ নাচ্ছিল!
নৃপ তাহাকে ঠেলিয়া দিয়া কহিল, তোর বাঁ চোখ নাচ্লে আমার বর আসবে কেন?
নীরু কহিল, তা ভাই, আমার বাঁ চোখটা না হয় তোরি বরের জন্যে নেচে নিলে তাতে আমি দুঃখিত নই! কিন্তু মুখুজ্জে মশায়, জলখাবারত দুটি লোকের জন্যে দেখলুম, সেজদিদি কি স্বয়ম্বরা হবে না কি?
অক্ষয়। আমাদের ছোড়দিদিও বঞ্চিত হবেন না।
নীরু। আহা মুখুজ্জে মহাশয়, কি সুসংবাদ শোনালে? তোমাকে কি বক্শিষ দেব! এই নাও আমার গলার হার—আমার দু’হাতের বালা।
শৈল ব্যস্ত হইয়া বলিল—আঃ ছিঃ হাত খালি করিস্নে।
নীরু। আজ আমাদের বরের অনারে পড়ার ছুটি দিতে হবে মুখুজ্জে মশায়!
নৃপ। আঃ কি বর বর করছিস্! দেখত ভাই মেজদিদি।