পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
১২৯

নীরবালার প্রবেশ।

 রসিক। আগচ্ছ বরদে দেবি! কিন্তু বর তুমি আমাকে দেবে কি না জানিনে আমি তোমাকে একটি বর দেবার জন্যে প্রাণপাত করে মর্‌চি। শিব ত কিছুই কর্‌চেন না তবু তোমাদের পূজো পাচ্চেন, আর এই যে বুড়ো খেটে মরচে একি কিছুই পাবে না?

 নীরবালা। শিব পান ফুল, তুমি পাবে তার ফল―তোমাকেই বরমাল্য দেব রসিকদাদা!

 রসিক। মাটির দেবতাকে নৈবেদ্য দেবার সুবিধা এই যে সেটি সম্পূর্ণ ফিরে পাওয়া যায়—আমাকে ও নির্ভয়ে বরমাল্য দিতে পারিস্, যখনি দরকার হবে তখনি ফিরে পাবি―তার চেয়ে ভাই আমাকে একটা গলাবন্ধ বুনে দিস্, বরমাল্যের চেয়ে সেটা বুড়োমানুষের কাজে লাগ্‌বে।

 নীর। তা দেব—এক জোড়া পশমের জুতো বুনে রেখেছি সেও শ্রীচরণেষু হবে।

 রসিক। আহা, কৃতজ্ঞতা একেই বলে? কিন্তু নীরু, আমার পক্ষে গলাবন্ধই যথেষ্ট—আপাদমস্তক নাই হোল, সে জন্যে উপযুক্ত লোক পাওয়া যাবে, জুতোটা তাঁরি জন্যে রেখে দে।

 নীর। আচ্ছা, তোমার বক্ত্তৃতাও তুমি রেখে দাও?

 রসিক। দেখেছিস, ভাই শৈল, আজকাল নীরুরও লজ্জা দেখা দিয়েছে―লক্ষণ খারাপ।

 শৈল। নীরু তুই করচিস্ কি? আবার এ ঘরে এসেছিস্। আজ যে এখানে আমাদের সভা বস্‌বে―এখনি কে এসে পড়বে, বিপদে পড়বি।

 রসিক। সেই বিপদের স্বাদ ও একবার পেয়েছে, এখন বারবার বিপদে পড়বার জন্যে ছট্‌ফট করে বেড়াচ্ছে।

 নীর। দেখ রসিকদাদা তুমি যদি আমাকে বিরক্ত কর তা’হলে