করতে পারতুম। কিন্তু যাই বলুন পূর্ণবাবু, চোখ দুটির মত এমন আশ্চর্য্য সৃষ্টি আর কিছু হয় নি—শরীরের মধ্যে মন যদি কোথাও প্রত্যক্ষ বাস করে সে ঐ চোখের উপরে।
পূর্ণ। (সোৎসাহে) ঠিক বলেছেন রসিকবাবু! ক্ষুদ্র শরীরের মধ্যে যদি কোথাও অনন্ত আকাশ কিংবা অনন্ত সমুদ্রের তুলনা থাকে সে ঐ দুটি চোখে!
রসিক।
নিঃসীমশোভাসৌভাগ্যং নতাঙ্গ্যা নয়নদ্বয়ং
অন্যোহন্যালোকনানন্দবিরহাদিব চঞ্চলং―
বুঝেছেন পূর্ণবাবু?
পূর্ণ। না, কিন্তু বোঝবার ইচ্ছা আছে।
রসিক।
আনতাঙ্গী বালিকার শোভাসৌভাগ্যের সার নয়ন যুগল,
না দেখিয়া পরস্পরে তাই কি বিরহভরে হয়েছে চঞ্চল?
পূর্ণ। না রসিকবাবু, ও ঠিক হ’ল না! ও কেবল বাক্চাতুরী! দুটো চোখ পরস্পরকে দেখ্তে চায় না।
রসিক। অন্য দুটো চোখকে দেখতে চায় ত? সেই রকম অর্থ করেই নিন্ না! শেষ দুটো ছত্র বদ্লে দেওয়া যাক—
প্রিয়চক্ষু দেখাদেখি যে আনন্দ, তাই সে কি খুঁজিছে চঞ্চল?
পূর্ণ। চমৎকার হয়েছে রসিক বাবু!
প্রিয়চক্ষু-দেখাদেখি যে আনন্দ, তাই সে কি খুঁজিছে চঞ্চল?
অথচ সে বেচারা বন্দী—খাঁচার পাখীর মত কেবল এপাশে ওপাশে ছট্ফট্ করে—প্রিয়চক্ষু যেখানে, সেখানে পাখা মেলে উড়ে যেতে পারে না।
রসিক। আবার দেখাদেখির ব্যাপারখানাও যে কি রকম নিদারুণ, তাও শাস্ত্রে লিখেছে—
হত্বা লোচনবিশিখৈর্গত্বা কতিচিৎপদানি পদ্মাক্ষী
জীবতিযুবা ন বা কিং ভূয়ো ভূয়ো বিলোকয়তি।