পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৪
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

 চন্দ্র। কেবল শ্রী নয়, শক্তি।

 রসিক। একই কথা চন্দ্রবাবু। শক্তি যখন শ্রীরূপে আবির্ভূতা হন তখনই তাঁর শক্তির সীমা থাকে না! কি বলেন পূর্ণবাবু?

পুরুষবেশী শৈলের প্রবেশ।

 শৈল। মাপ করবেন চন্দ্রবাবু, আমার কি আস্‌তে দেরি হয়েছে?

 চন্দ্র। (ঘড়ি দেখিয়া) না এখনও সময় হয় নি। অবলাকান্ত বাবু আমার ভাগ্নী নির্ম্মলা আজ আমাদের সভার সভ্য হয়েছেন।

 শৈল। (নির্ম্মলার নিকট বসিয়া) দেখুন পুরুষরা স্বার্থপর, মেয়েদের কেবল নিজেদের সেবার জন্যই বিশেষ করে বন্ধ করে রাখ্‌তে চায়—চন্দ্রবাবু যে আপনাকে আমাদের সভার হিতের জন্যে দান করেছেন তাতে তাঁর মহত্ত্ব প্রকাশ পায়।

 নির্ম্মলা। আমার মামার কাছে দেশের কাজ এবং নিজের কাজ একই! আমি যদি আপনাদের সভার কোন উপকার করতে পারি তাতে তাঁরই সেবা হবে।

 শৈল। আপনি যে সৌভাগ্যক্রমে চন্দ্র বাবুকে ভাল করে জান্‌বার যোগ্যতা লাভ করেছেন এতে আপনি ধন্য।

 নির্মলা। আমি ওঁকে জান্‌ব না ত কে জান্‌বে?

 শৈল। আত্মীয় সব সময় আত্মীয়কে জানে না। আত্মীয়তায় ছোটকে বড় করে তোলে বটে, তেমনি বড়কেও ছোট করে আনে। চন্দ্রবাবুকে যে আপনি যথার্থভাবে জেনেছেন তাতে আপনার ক্ষমতা প্রকাশ পায়।

 নির্ম্মলা। কিন্তু আমার মামাকে যথার্থভাবে জানা খুব সহজ, ওঁর মধ্যে এমন একটি স্বচ্ছতা আছে।

 শৈল। দেখুন সে ত ওঁকে ঠিক মত জানা শক্ত। দুর্য্যোধন স্ফটিকের দেয়ালকে দেয়াল বলে দেখতেই পান নি। সরল স্বচ্ছতার মহত্ত্ব