পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
১৪১

 পূর্ণ। প্রথমে তাহারই জন্য অভিনন্দন প্রকাশ না করিয়া থাকিতে পারিতেছি না।

 রসিক। (মৃদু স্বরে) বলে যান পূর্ণবাবু!

 পূর্ণ। তাহারই জন্য অভিনন্দন প্রকাশ না করিয়া থাকিতে পারিতেছি না।

 রসিক। ভয় কি পূর্ণবাবু বলে যান্।

 পূর্ণ। যে নূতন সৌন্দর্য এবং গৌরব—(কাশি) যে নূতন সৌন্দর্য্য (পুনরায় কাশি) অভিনন্দন―

 রসিক। (উঠিয়া)―সভাপতিমশায়, আমার একটা নিবেদন আছে। আজ পূর্ণবাবু সকল সভ্যের পূর্ব্বেই সভায় উপস্থিত হয়েছেন। উনি অত্যন্ত অসুস্থ, তথাপি উৎসাহ সম্বরণ করতে পারেন নি। আজ আমাদের সভায় প্রথম অরুণোদয়, তাই দেখবার জন্যে পাখী প্রত্যুষেই নীড় পরিত্যাগ করে বেরিয়েছেন—কিন্তু দেহ রুগ্ন তাই পূর্ণহৃদয়ের আবেগ কণ্ঠে ব্যক্ত কর্‌বার শক্তি নেই—অতএব ওঁকে আজ আমাদের নিষ্কৃতি দান করতে হবে। এবং আজ নব প্রভাতের যে অরুণচ্ছটার স্তবগান করতে উনি উঠেছিলেন তাঁর কাছেও এই অবরুদ্ধকণ্ঠ ভক্তের হয়ে আমি মার্জ্জনা প্রার্থনা করি। পূর্ণবাবু, আজ বরঞ্চ আমাদের সভার কার্য্য বন্ধ থাকে সেও ভাল তথাপি বর্ত্তমান অবস্থায় আজ আপনাকে কোন প্রস্তাব উত্থাপন করতে দিতে পারিনে। সভাপতিমশায় ক্ষমা করবেন এবং আমাদের সভাকে যিনি আপন প্রভা দ্বারা অন্য সার্থকতা দান করতে এসেছেন ক্ষমা করা তাঁদের স্বজাতিসুলভ করুণ হৃদয়ের সহজ ধর্ম্ম।

 চন্দ্র। আমি জানি, কিছুকাল থেকে পূর্ণবাবু ভাল নেই, এ অবস্থায় আমরা ওঁকে ক্লেশ দিতে পারি না। বিশেষতঃ অবলাকান্তবাবু ঘরে বসেই আমাদের সভার কাজ অনেকদূর অগ্রসর করে দিয়েছেন।