পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫২
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

 অক্ষয়। তা আছে—কোম্পানির শাসন তিনি মানেন না, আমি তার প্রমাণ পেয়েছি।

নৃপ ও নীরর প্রবেশ।

 নীর। দিদি!

 অক্ষয়। এখন দিদি বই আর কথা নেই, অকৃতজ্ঞ! দিদি যখন বিচ্ছেদ দহনে উত্তরোত্তর তপ্ত কাঞ্চনের মত শ্রী ধারণ করছিলেন তখন তোমদের ক’টিকে সুশীতল করে রেখেছিল কে?

 নীর। শুন্‌চ দিদি! এমন মিথ্যে কথা! তুমি যতদিন ছিলে না আমাদের একবার ডেকেও জিজ্ঞাসা করেন নি—কেবল চিঠি লিখেছেন আর টেবিলের উপর দুই পা তুলে দিয়ে বই হাতে করে পড়েচেন। তুমি এসেছ এখন আমাদের নিয়ে গান হবে, ঠাট্টা হবে, দেখাবেন যেন―

 নৃপ। দিদি, তুমিও ত ভাই এতদিন আমাদের একখানিও চিঠি লেখনি?

 পুরবালা। আমার কি সময় ছিল ভাই? মাকে নিয়ে দিনরাত ব্যস্ত থাক্‌তে হয়েছিল।

 অক্ষয়। যদি বল্‌তে, তোদের ভগ্নীপতির ধ্যানে নিমগ্ন ছিলুম তা হলে কি লোকে নিন্দে করত?

 নীর। তা হলে ভগ্নীপতির আস্পর্দ্ধা আরো বেড়ে যেত। মুখুজ্জেমশায়, তুমি তোমার বাইরের ঘরে যাও না! দিদি এতদিন পরে এসেছেন আমরা কি ওঁকে নিয়ে একটু গল্প করতে পাব না?

 অক্ষয়। নৃশংসে, বিরহদাবদগ্ধ তোর দিদিকে আবার বিরহে জ্বালাতে চাস্? তোদের ভগ্নীপতিরূপ ঘনকৃষ্ণ মেঘ মিলনরূপ মুষল ধারাবর্ষণ দ্বারা প্রিয়ার চিত্তরূপ লতানিকুঞ্জে আনন্দরূপ কিসলয়োদ্‌গম করে প্রেমরূপ বর্ষায় কটাক্ষরূপ বিদ্যুৎ―

 নীর। এবং বকুনিরূপ ভেকের কলরব―