পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
১৭৩

কাজলবিহীন সজল নয়নে
হৃদয়দুয়ারে ঘা দিয়ো।
আকুল আঁচলে পথিকচরণে
মরণের ফাঁদ ফাঁদিয়ো!
না করিয়া বাদ মনে যাহা সাধ
নিদয়া নীরবে সাধিয়ো!

 পুর। তুমি আবার গান ধরলে? আমি এখন কি করি বল দেখি? তাদের আসবার সময় হল—এখনো আমার খাবার তৈরি করা বাকি আছে। (নৃপ নীরুকে লইয়া প্রস্থান)

রসিকের প্রবেশ।

 অক্ষয়। পিতামহ ভীষ্ম, যুদ্ধের সমস্তই প্রস্তুত?

 রসিক। সমস্তই। বীর পুরুষ দুটিও সমাগত।

  অক্ষয়। এখন কেবল দিব্যাস্ত্র দুটি সাজতে গেছেন। তুমি তাহলে সেনাপতির ভার গ্রহণ কর, আমি একটু অন্তরালে থাকতে ইচ্ছা করি।

 রসিক। আমিও প্রথমটা একটু আড়াল হই! (উভয়ের প্রস্থান)

শ্রীশ ও বিপিনের প্রবেশ।

 শ্রীশ। বিপিন, তুমি ত আজকাল সঙ্গীত বিদ্যার উপর চীৎকার শব্দে ডাকাতী আরম্ভ করেছ―কিছু আদায় কর্‌তে পারলে?

 বিপিন। কিছু না! সঙ্গীতবিদ্যার দ্বারে সপ্তসুর অনবরত পাহারা দিচ্ছে, সেখানে কি আমার ঢোকবার জো আছে? কিন্তু এ প্রশ্ন কেন তোমার মনে উদয় হল?

 শ্রীশ। আজকাল মাঝে মাঝে কবিতায় সুর বসাতে ইচ্ছে করে! সে দিন বইয়ে পড়ছিলুম―

কেন সারাদিন ধীরে ধীরে
বালু নিয়ে শুধু খেল তীরে!