পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৪
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

 রসিক। দায় নয় ত কি মশায়। সে কিছুতেই হবে না! আমি বরঞ্চ সেই ছেলে দুটোকে বনমালীর হাতছাড়িয়ে কুমারটুলি থেকে এখনও ফিরিয়ে আনব তবু―

 শ্রীশ। আপনার কাছে কি অপরাধ করেছি রসিক বাবু?―

 রসিক। না, না, এ ত অপরাধের কথা হচ্ছে না। আপনারা ভদ্রলোক, কৌমার্য্য ব্রত অবলম্বন করেছেন—আমার অনুরোধে পড়ে পরের উপকার করতে এসে শেষকালে―

 বিপিন। শেষকালে নিজের উপকার করে ফেলব এটুকু আপনি সহ করতে পারবেন না―এমনি হিতৈষী বন্ধু!

 শ্রীশ। আমরা যেটাকে সৌভাগ্য বলে স্বীকার করচি―আপনি তার থেকে আমাদের বঞ্চিত করতে চেষ্টা করচেন কেন?

 রসিক। শেষকালে আমাকে দোষ দেবেন না?

 বিপিন। নিশ্চয় দেব যদি না আপনি স্থির হয়ে শুভকর্ম্মে সহায়তা করেন।

 রসিক। আমি এখনো সাবধান করচি—গতং তদ্‌গাম্ভীর্যং তটমপি চিতং জালিকশতৈঃ সখে হংসোত্তিষ্ঠ, ত্বরিতমমুতো গচ্ছ সরসীং!

সে গাম্ভীর্য্য গেল কোথা,  নদীতট হের হোথা
জালিকেরা জালে ফেলে ঘিরে―
সখে হংস ওঠ ওঠ,  সময় থাকিতে ছোট
হেথা হতে মানসের তীরে!

 শ্রীশ। কিছুতেই না! তা, আপনার সংস্কৃত শ্লোক ছুড়ে মারলেও সখা হংসরা কিছুতেই এখান থেকে নড়চেন না!

 রসিক। স্থান খারাপ বটে নড়বার জো নেই! আমি ত অচল হয়ে বসে আছি―হায়, হায়―