পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
২৯

কবি হওয়া আর কি। ল্যাজই বল কবিত্বই বল ভিতরে না থাক্‌লে জোর করে টেনে বের করবার জো নেই!

 পুরবালা প্রবেশ করিয়া কেরোসিন্ ল্যাম্পটা লইয়া নাড়িয়া চাড়িয়া কহিল—বেহারা কি রকম আলো দিয়ে গেছে, মিট্‌মিট্ করচে! ওকে বলে বলে পারা গেল না!

 অক্ষয়। সে বেটা জানে কিনা অন্ধকারেই আমাকে বেশি মানায়।

 পুরবালা। আলোতে মানায় না? বিনয় হচ্ছে না কি? এট। ত নতুন দেখ্‌চি।

 অক্ষয়। আমি বল্‌ছিলুম, বেহারা বেটা চাঁদ বলে আমাকে সন্দেহ করেচে!

 পুর। ওঃ তাই ভাল! তা ওর মাইনে বাড়িয়ে দাও! কিন্তু রসিক দাদা, আজ কি কাণ্ডটাই করলে!

 রসিক। ভাই, বর ঢের পাওয়া যায় কিন্তু সবাই বিবাহযোগ্য হয় না, সেইটের একটা সামান্য উদাহরণ দিয়ে গেলুম।

 পুর। সে উদাহরণ না দেখিয়ে দুটো একটা বিবাহযোগ্য বরের উদাহরণ দেখলেই ত ভাল হত!

 শৈল। সে ভার আমি নিয়েছি দিদি।

 পুর। তা আমি বুঝেছি! তুমি আর তোমার মুখুজ্জে মশায়ে মিলে ক’দিন ধরে যে রকম পরামর্শ চল্‌চে একটা কি কাণ্ড হবেই।

 অক্ষয়। কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড ত আজ হয়ে গেল।

 রসিক। লঙ্কাকাণ্ডের আয়োজনও হচ্চে, চিরকুমার সভার স্বর্ণলঙ্কায় আগুন লাগাতে চলেছি।

 পুর। শৈল তার মধ্যে কে?

 রসিক। হনুমান ত নয়ই।

 অক্ষয়। উনিই হচ্চেন স্বয়ং আগুন।