পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
৪৫

 অক্ষয়। সে কি কথা! ভূতভাবনের যে ভৃত্যগুলি একবার মরে ভূত হয়েছে—তারা যে দ্বিতীয়বার মরবে!

রসিকের প্রবেশ।

 পুরবালা। আজ যে রসিকদাদার মুখ ভারি প্রফুল্ল দেখাচ্চে?

 রসিক। ভাই, তোর রসিকদাদার মুখের ঐ রোগটা কিছুতেই ঘুচল না। কথা নেই বার্ত্তা নেই প্রফুল্ল হয়েই আছে—বিবাহিত লোকেরা দেখে’ মনে মনে রাগ করে।

 পুরবালা। শুন্‌লে ত, বিবাহিত লোক! এর একটা উপযুক্ত জবাব দিয়ে যাও!

 অক্ষয়। আমাদের প্রফুল্লতার খবর ও বৃদ্ধ কোথা থেকে জানবে? সে এত রহস্যময় যে, তা উদ্ভেদ করতে আজ পর্য্যন্ত কেউ পারলে না, —সে এত গভীর যে আমরাই হাত্‌ড়ে খুঁজে পাইনে, হঠাৎ সন্দেহ হয় আছে কি না।

 পুরবালা “এই বুঝি!” বলিয়া রাগ করিয়া চলিয়া যাইবার উপক্রম করিল।

 অক্ষয় তাহাকে ধরিয়া ফিরাইয়া কহিল—দোহাই তোমার এই লোকটির সাম্‌নে রাগারাগি কোরো না—তাহলে ওর আস্পর্ধা আরো বেড়ে যাবে।—দেখ দাম্পত্য তত্ত্বানভিজ্ঞ বৃদ্ধ, আমরা যখন রাগ করি তখন স্বভাবতঃ আমাদের কণ্ঠস্বর প্রবল হয়ে উঠে, সেইটেই তোমাদের কর্ণগোচর হয়; আর অনুরাগে যখন আমাদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে, কানের কাছে মুখ আন্‌তে গিয়ে মুখ বারম্বার লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পড়তে থাকে, —তখন ত খবর পাও না!

 পুরবালা। আঃ-চুপ কর!

 অক্ষয়। যখন গয়নার ফর্দ্দ হয় তখন বাড়ীর সরকার থেকে স্যাকরা