পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
৬১

 পূর্ণ। অক্ষয় বাবু আমাদের সভাকে যে স্থানান্তর করবার ব্যবস্থা করচেন এটা আমার ভাল ঠেক্‌চে না।

 শ্রীশ। সন্দেহ জিনিষটা নাস্তিকতার ছায়া। মন্দ হবে, ভেঙে যাবে, নষ্ট হবে এ সব ভাব আমি কোন অবস্থাতেই মনে স্থান দিইনে। ভালই হবে—যা হচ্চে বেশ হচ্চে―চিরকুমার সভার উদার বিস্তীর্ণ ভবিষ্যৎ আমি চোখের সম্মুখে দেখ তে পাচ্চি—অক্ষয় বাবু সভাকে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে তার কি অনিষ্ট কর্‌তে পারেন? কেবল গলির এক নম্বর থেকে আরেক নম্বরে নয়, আমাদের যে পথে পথে দেশে দেশে সঞ্চরণ করে বেড়াতে হবে! সন্দেহ শঙ্কা উদ্বেগ এগুলো মন থেকে দূর করে দাও পূর্ণবাবু―বিশ্বাস এবং আনন্দ না হলে বড় কাজ হয় না!

 পূর্ণ নিরুত্তর হইয়া বসিয়া রহিল। বিপিন কহিল―দিনকতক দেখাইযাক্ না—যদি কোন অসুবিধার কারণ ঘটে তা হলে স্বস্থানে ফিরে আসা যাবে—আমাদের সেই অন্ধকার বিবরটি ফস্‌ করে কেউ কেড়ে নিচ্ছে না!

 হায়, পূর্ণের হৃদয় বেদনা কে বুঝিবে?

 অকস্মাৎ চন্দ্রমাধব বাবুর সবেগে প্রবেশ। তিন জনের সসম্ভ্রমে উত্থান।

 চন্দ্র। দেখ আমি সেই কথাটা ভাবছিলুম―

 শ্রীশ। বসুন!

 চন্দ্র। না, না, বস্‌ব না, আমি এখনি যাচ্চি! আমি বল্‌ছিলুম, সন্ন্যাসব্রতের জন্যে আমাদের এখন থেকে প্রস্তুত হতে হবে। হঠাৎ একটা অপঘাত ঘট্‌লে, কিংবা সাধারণ জ্বরজালায়, কি রকম চিকিৎসা সে আমাদের শিক্ষা করতে হবে―ডাক্তার রামরতন বাবু ফি রবিবারে আমাদের দুঘণ্টা করে বক্তৃতা দেবেন বন্দোবস্ত করে এসেছি।

 শ্রীশ। কিন্তু তাতে অনেক বিলম্ব হবে না?