পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

বলিয়াই বুঝিতে পারিল কথাটা গদ্যের মধ্যে হঠাৎ পদ্যের মত কিছু যেন বাড়াবাড়ি হইয়া পড়িল। লজ্জায় তাহার কান লাল হইয়া উঠিল। বিপিন স্বাভাবিক সুগম্ভীর শান্তস্বরে কহিল—পৃথিবী যত বেশী পঙ্কিল পৃথিবীর সংশোধন কার্য্য তত বেশী পবিত্র।

 এই কথাটায় কৃতজ্ঞ নির্ম্মলার মুখের ভাব লক্ষ্য করিয়া পূর্ণ ভাবিল আহা, কথাটা আমারি বলা উচিত ছিল।—বিপিন বলিয়াছে বলিয়া তাহার উপর অত্যন্ত রাগ হইল।

 শ্রীশ। সভার অধিবেশনে স্ত্রীসভ্য হওয়া সম্বন্ধে নিয়মমত প্রস্তাব উত্থাপন করে যা স্থির হয় আপনাকে জানাব।

 নির্ম্মলা এক মুহূর্ত্ত অপেক্ষা না করিয়া পালের নৌকার মত নিঃশব্দে চলিয়া যাইবার উপক্রম করিল। হঠাৎ অধ্যাপক সচেতন হইয়া ডাকিলেন―ফেনি, আমার সেই গলার বোতামটা?

 নির্ম্মলা সলজ্জ হাসিয়া মৃদুকণ্ঠে ইসারা করিয়া কহিল, গলাতেই আছে।

 চন্দ্রবাবু গলায় হাত দিয়া “হাঁ হাঁ আছে বটে” বলিয়া তিন ছাত্রের দিকে চাহিয়া হাসিলেন।


(৮)

 নৃপ। আজকাল তুই মাঝে মাঝে কেন অমন গম্ভীর হচ্চিল বল্‌ত নীরু।

 নীরু। আমাদের বাড়ির যত কিছু গাম্ভীর্য্য সব বুঝি তোর একলার? আমার খুসি আমি গম্ভীর হব!

 নৃপ। তুই কি ভাবছিস্ আমি বেশ জানি।