কোন দিন হইলে শ্রীশ তাহা লক্ষ্য করিত কি না সন্দেহ—আজ তাহার কাছে কিছুই এড়াইল না। অনতিপূর্ব্বেই ঘরের মধ্যে রমণীদল যে ছিল, ঘরে প্রবেশ করিয়াই সে তাহা বুঝিতে পারিল।
অক্ষয় চলিয়া গেলে ঘরটি শ্রীশ ভাল করিয়া দেখিয়া লইল। টেবিলের মাঝখানে ফুলদানিতে ফুল সাজানো। সেটা চকিতে তাহাকে একটু যেন বিচলিত করিল। তাহার একটা কারণ শ্রীশ অত্যন্ত ফুল ভাল বাসে, তাহার আর একটা কারণ, শ্রীশ কল্পনাচক্ষে দেখিতে পাইল, অনতিকাল পূর্ব্বেই যাহাদের সুনিপুণ দক্ষিণ হস্ত এই ফুলগুলি সাজাইয়াছে তাহারাই এখনি ত্রস্তপদে ঘর হইতে পালাইয়া গেল।
বিপিন ঈষৎ হাসিয়া বলিল, যা বল ভাই, এ ঘরটি চিরকুমার সভার উপযুক্ত নয়।
হঠাৎ মৌনভঙ্গে শ্রীশ চকিত হইয়া উঠিয়া কহিল, কেন নয়?
বিপিন কহিল, ঘরের সজ্জাগুলি তোমার নবীন সন্ন্যাসীদের পক্ষেও যেন বেশী বোধ হচ্চে।
শ্রীশ। আমার সন্ন্যাসধর্ম্মের পক্ষে বেশী কিছু হতে পারে না।
বিপিন। কেবল নারী ছাড়া!
শ্রীশ কহিল, হাঁ ঐ একটি মাত্র!―লেখকের অনুমান মাত্র হইতে পারে কিন্তু অন্য দিনের মত কথাটায় তেমন জোর পৌঁছিল না।
বিপিন কহিল, দেয়ালের ছবি এবং অন্যান্য পাঁচ রকমে এ ঘরটিতে সেই নারী জাতির অনেকগুলি পরিচয় পাওয়া যায় যেন।
শ্রীশ। সংসারে নারীজাতির পরিচয় ত সর্ব্বত্রই আছে।
বিপিন। তা ত বটেই। কবিদের কথা যদি বিশ্বাস করা যায় তাহলে চাঁদে ফুলে লতায় পাতায় কোন খানেই নারীজাতির পরিচয় থেকে হতভাগ্য পুরুষমানুষের নিষ্কৃতি পাবার জো নেই।
শ্রীশ হাসিয়া কহিল, কেবল ভেবেছিলুম, চন্দ্রবাবুর বাসায় সেই