একতলার ঘরটিতে রমণীর কোন সংস্রব ছিল না। আজ সে ভ্রমটা হঠাৎ ভেঙে গেল। নাঃ, ওরা পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়েছে।
বিপিন। বেচারা চিরকুমার ক’টির জন্যে একটা কোনও ফাঁক রাখেনি। সভা করবার জায়গা পাওয়াই দায়।
শ্রীশ। এই দেখ না!―বলিয়া কোণের একটা টিপাই হইতে গোটাদুয়েক চুলের কাঁটা তুলিয়া দেখাইল।
বিপিন কাঁটা দুটি লইয়া পর্য্যবেক্ষণ করিয়া কহিল, ওহে ভাই এস্থানটাত কুমারদের পক্ষে নিষ্কণ্টক নয়।
শ্রীশ। ফুলও আছে কাঁটাও আছে।
বিপিন। সেইটেই ত বিপদ। কেবল কাঁটা থাক্লে এড়িয়ে চলা যায়!
শ্রীশ অপর কোণের ছোট বইয়ের শেল্ফ হইতে বইগুলি তুলিয়া দেখিতে লাগিল। কতকগুলি নভেল, কতকগুলি ইংরাজি কাব্যসংগ্রহ। প্যাল্গ্রেভের গীতিকাব্যের স্বর্ণভাণ্ডার খুলিয়া দেখিল, মার্জ্জিনে মেয়েলি অক্ষরে নোট লেখা—তখন গোড়ার পাতাটা উল্টাইয়া দেখিল। দেখিয়া একটু নাড়িয়া চাড়িয়া বিপিনের সম্মুখে ধরিল।
বিপিন পড়িয়া কহিল, নৃপবালা! আমার বিশ্বাস নামটি পুরুষ মানুষের নয়। কি বোধ কর।
শ্রীশ। আমারও সেই বিশ্বাস। এ নামটিও অন্ত জাতীয়ের বলে ঠেকচে হে!―বলিয়া আর একটা বই দেখাইল
বিপিন কহিল―নীরবালা! এ নামটি কাব্যগ্রন্থে চলে কিন্তু কুমার সভায়―
শ্রীশ। কুমার সভাতেও এই নামধারিণীরা যদি চলে আসেন তা হলে দ্বাররোধ করতে পারি এত বড় বলবান ত আমাদের মধ্যে কাউকে দেখিনে।