আশীর্ব্বাদ করুন্ আপনার উপদেশ যেন ব্যর্থ না হয়, নিজেকে যেন আপনার আদর্শের উপযুক্ত করতে পারি।
একান্ত নিষ্ঠার সহিত উচ্চারিত এই কথাগুলি শুনিয়া চন্দ্রবাবু কিছু বিস্মিত হইলেন। তাঁহার সকল উপদেশের প্রতি নির্ম্মলার তর্কবিহীন বিনম্র শ্রদ্ধার কথা মনে পড়িল! স্নেহার্দ্র মনে আবার ভাবিলেন, এ যেন নির্ম্মলারই ভাই।
চন্দ্র। আমার ভাগ্নী নির্ম্মলাকে কুমারসভার সভ্যশ্রেণীতে ভুক্ত করতে আপনাদের কোন আপত্তি নেই?
রসিক। আর কোন আপত্তি নেই, কেবল একটু ব্যাকরণের আপত্তি। কুমার সভায় কেউ যদি কুমারীবেশে আসেন তাহলে বোপদেবের অভিশাপ।
শৈল। বোপদেবের অভিশাপ একালে খাটে না!
রসিক। আচ্ছা, অন্ততঃ লোহারামকে ত বাঁচিয়ে চল্তে হবে। আমি ত বোধ করি, স্ত্রীসভ্যরা যদি পুরুষ সভ্যদের অজ্ঞাতসারে বেশ ও নাম পরিবর্ত্তন করে আসেন তাহলে সহজে নিষ্পত্তি হয়।
শ্রীশ। তাহলে একটা কৌতুক এই হয় যে কে স্ত্রী কে পুরুষ নিজেদের সেই সন্দেহটা থেকে যায়―
বিপিন। আমি বোধ হয় সন্দেহ থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারি।
রসিক। আমাকেও বোধ হয় আমার নাৎনী বলে কারো হঠাৎ আশঙ্কা না হতে পারে!
শ্রীশ। কিন্তু অবলাকান্ত বাবু সম্বন্ধে একটা সন্দেহ থেকে যায়। তখন শৈল অদূরবর্ত্তী টিপাই হইতে মিষ্টান্নের থালা আনিতে প্রস্থান করিল।
দেখুন রসিক বাবু, ভাষাতত্বে দেখা যায়, ব্যবহার করতে করতে একটা শব্দের মূল অর্থ লোপ পেয়ে বিপরীত অর্থ ঘটে থাকে।