পাতা:প্রবন্ধ পুস্তক-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন এবং নবীনা। $8? প্রাচীনগণের পতিব্ৰত্য যেরূপ দৃঢ়গ্রন্থির দ্বারা হৃদরে নিবদ্ধ ছিল, পাতিব্ৰত্য যেরূপ তাহাদিগের অস্থি মজ্জা শোণিতে প্রবিষ্ট ছিল, নবীনাদিগেরও কি তাই ? অনেকের বটে, কিন্তু অধিকাংশের কি তাই ? নবীন গণ পতিব্ৰতা বটে, কিন্তু যত লোকনিন্দ ভয়ে, তত ধৰ্ম্ম ভয়ে নহে । তাহার পর,দানাদিতে প্রাচীনাদিগের যেরূপ মনোভিনিবেশ ছিল, নবীনাদিগের সেরূপ দেখা যায় না। প্রাচীনগণের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, যে দানে পরমার্থের কাজ হয়। যে দান করে, সে স্বর্গে যায়। এক্ষণকার যুবতীগণের স্বর্গে বিশ্বাস তত দৃঢ় নহে; তাহাদের পরলোকে স্বৰ্গপ্রাপ্তিকামনা তত বলবতী নহে। ইংরেজী সভ্যতার ফলে,দেশে নানাবিধ সামগ্রীর প্রাচুর্য হওয়াতে সকলেরই অর্থের প্রয়োজন বাড়িয়াছে, স্ত্রীলোকদিগেরও বাড়িয়াছে ; এজন্য দানে তাদৃশী আমুরক্তি আর নই। তত দান করিলে, অর কুলায় না। টাকায় যে সকল মুখ কেন যায়, তাহার সংখা এবং বৈচিত্র্য বাড়িয়াছে ; দানের আধিক্য করিলে, এখন অনেক বাঞ্ছনীয় সুখে বঞ্চিত হইতে হয় । সুতরাং স্ত্রীলোকে (এবং পুরুবে) আর তত দানশালী নহে। হিন্দুদিগের একটি প্রধান ধৰ্ম্ম অতিথিসৎকার। যে গৃহে আসে ,ভাইকে আহারাদির দ্বারা পরিতুষ্ট করণ পক্ষে এতদ্ধেশীয় লোকের তুল্য কোন জাতি ছিল না। প্রাচীনাগণ এই গুণে বিশেষ গুণশালিনী ছিলেন। নবীনাদিগের মধ্যে সে ধৰ্ম্ম একেবারে বিলুপ্ত হইতেছে। গৃহে অতিথি অভ্যাগত আসিলে, প্রাচীনের কৃতাৰ্থ হইতেন, নবীনগণ বিরক্ত হয়েন। লোককে আহার করান, প্রাচীনাদিগের প্রধান সুখ ছিল, নবীনাগণ -ইহাকে ঘোরতর বিপদ মনে করেন । ধৰ্ম্মে যে নবীনগণ প্রাটনাদিগের অপেক্ষ নিকৃষ্ট, তাহার