পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বতমান বঙ্গ সাহিত্য SOĆ মহাকাব্যের দিন যে চলে গেছে, তার প্রমাণ বৰ্তমান ইউরোপেও পাওয়া যায়। সে দেশে কবিতা আজও লেখা হয়ে থাকে, কিন্তু হাতে-বহরে সে সবই ছোটাে। ফরাসিদেশের বিখ্যাত লেখক আদ্রে জীদ বলেন যে, গীতাঞ্জলি মস্টিমেয় না হলে বৰ্তমান ইউরোপ তা করজোড়ে গ্রহণ করত না। তাঁর ধারণা ছিল যে, ভারতবর্ষে রামায়ণ-মহাভারতের চাইতে ছোটো কিছ লেখা হয় নি এবং হতে পারে না। এ কথা! অবশ্য সত্য নয়। সংস্কৃত সাহিত্যে যেমন এক দিকে রামায়ণ-মহাভারত আছে, অপর দিকে তেমনি দী-লাইন চার-লাইন কবিতারও ছড়াছড়ি। ভারতবর্ষে পাবে যা ছিল না, সে হচ্ছে এ দায়ের মাঝামাঝি কোনো পদার্থ। একালে আমরা যে ব্যাসবাল্মীকির অন্যাকরণ না করে অমর-ভাতৃহাঁরর অনসরণ করি, সে যােগধমের প্রভাবে। যে কারণে ইউরোপে আর মহাকাব্য লেখা হয় না। সেই একই কারণে এ দেশেও মহাকাব্য লেখা পথগিত রয়েছে। এ যাগের কবিতা হচ্ছে হৃদয়ের সবগতোন্তি, সতরাং সে উক্তি একটি দীঘনিশবাসের চাইতে দীর্ঘ হতে পারে না। কিন্তু একালে গল্প আমরা গদ্যে বলি, কেননা আমরা আবিস্কার করেছি যে, দনিয়ার কথা দনিয়ার লোকের কাছে পৌছে দেবার জন্য গদ্যের পথই প্রশস্ত। সতরাং গলেপির উত্তরোত্তর দেহ সংকুচিত হওয়াটা ক্ৰমোন্নতির লক্ষণ নয়। ইউরোপে আজও গদ্যে এমন-এমন নভেল লেখা হয়ে থাকে, যা আকারে মহাভারতের সমান না হলেও রামায়ণের তুল্যমাল্য। উনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপের সব শ্রেষ্ঠ নভোলিস্ট টলস্টয়ের একএকখানি নভেল এক-একখানি মহাকাব্যবিশেষ। ও দেশের গদ্যসাহিত্যে যেমন এক দিকে ব্যাস-বালিমীকি আছে, অপর দিকে তেমনি আমার-ভাতুহরিরও অভাব নেই। যে ক্ষেত্রে হাজার হাজার পাতার দা চারটি গলপ জন্মলাভ করছে, সেই ক্ষেত্রেই আবার দ-পাতা চার-পাতার হাজার হাজার গলপ জন্মলাভ করছে— এতেই পরিচয় দেয় যে, ইউরোপের মনের ক্ষেত্ৰ কত সরস কত সতেজ কত উবাির। সতরাং আমাদের নব গদ্যসাহিত্যে যে ছোটোগলপ ছাড়া আর কিছ গজায় না। তাতে অবশ্য এ সাহিত্যের দৈন্যেরই পরিচয় দেন্স। কিন্তু এ দীনতা ইউরোপীয় সাহিত্যের তুলনায় যতটা ধরা পড়ে, উনবিংশ শতাব্দীর বঙ্গ সাহিত্যের তুলনায় ততটা নয়। বঙ্কিমচন্দ্র এবং রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিলে গত যাগের গল্পসাহিত্যে সঞ্জীবচন্দ্রের কণ্ঠমালা এবং তারক গাণ্ডগলির সবৰ্ণলতা ব্যতীত আর কিছই অবশিষ্ট থাকে না। এ যাগের গল্পলেখকেরা যে সাধারণত ছোটোগলপ রচনার পক্ষপাতী। তার কারণ এই যে, আমাদের জীবন ও মন এতই বৈচিত্র্যহীন এবং সে মনে ও সে জীবনে ঘটনা এত অলপই ঘটে, এবং যা ঘটে তাও এতটা বিশেষত্বহীন যে, তার থেকে কোনো বিরাট কাব্যের উপাদান সংগ্রহ করা যায় না। এ অবস্থায় আমাদের পক্ষে অ্যানা-ক্যারেনিনা কিংবা লে মিজারেবল গড়তে বসায় বাচালতার পরিচয় দেওয়া হয়, প্রতিভার নয়। এ সমাজে যা পাওয়া যায়, এবং সম্পভবত প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, সে হচ্ছে ছোটােগলেপার খোরাক। আমাদের জীবনের রঙ্গভূমি যতই সংকীর্ণ হোক-না কেন, তারই মধ্যে হাসিকান্নার অভিনয় নিত্য চলছে, কেননা আমরা আমাদের মনষ্যত্ব খব করেও নিজেদের মানষ ছাড়া অপর কোনো শ্রেণীর জীবে পরিণত করতে পারি DD DBDSBD DBDBBDSDBB DDSBBD DBBDSDuDDBD DBBBBBB