পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SVO প্রবন্ধসংগ্ৰহ রেখেছিল। ফলে সশস্তদশ শতাব্দীর মধ্য ভাগ থেকে আরম্পভ করে অন্টাদশ শতাব্দীর মধ্য ভাগ পযন্ত ফরাসি সাহিত্যের অন্যাকরণে জমানিতে যে সাহিত্য রচিত হয়, তার কোনোরাপ মাল্য কোনোরাপ মর্যাদা নেই। এই ফরাসি সাহিত্যের গণে ফরাসি ভাষাও জমানদের কাছে একটি নব ক্লাসিক হয়ে ওঠে। নব জমানির আদিকতা ফ্রেডরিক দি গ্রেট নিজের রসনা ও লেখনীকে সক্লেশে ফরাসি ভাষাতেই বলতে ও লিখতে শিখিয়েছিলেন, অর্থাৎ যিনি ইউরোপে জমান জাতির রাষ্ট্ৰীয় শক্তি সম্প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য বন্ধপরিকর হয়েছিলেন, স্বয়ং তিনিই বাহোসে বাহাল তবিয়তে এবং খোশমেজাজে ফরাসি সাহিত্য ও ফরাসি ভাষার সাবভৌমিক আধিপত্য শিরোধান্য করে নিয়েছিলেন। কিমাশচযমতঃপরম। কিন্তু এর চাইতেও আশচয্যের বিষয় আছে। শনতে পাই, জগদবিখ্যাত জমান দার্শনিক লাইবনিৎস Leibnitz এই যাগে তাঁর দার্শনিক গ্রন্থসকল ফরাসি ভাষাতেই রচনা করেন সম্পভবত এই বিশবাসে যে, তাঁর মাতৃভাষা দশানরচনার পক্ষে উপযোগী নয়। এ বিশ্ববাস যে কতদর অমলেক তার প্রমাণ তাঁর পরবতী এবং ইউরোপের নবযাগের অদ্বিতীয় দার্শনিক কান্টের গ্রন্থসকল। সে-সকল গ্রন্থ যে এ যাগের দর্শনশাস্ত্রের ক্ল্যাসিক হয়ে উঠেছে শােধ তাই নয়, কান্টের রচনার প্রসাদে ইউরোপের মনে এমন একটি ধারণা জন্মে গেছে যে, জমান ভাষাই হচেছ দশন রচনা করবার পক্ষে সবাপেক্ষা উপযোগী ভাষা। অতএব দেখা গেল, মার্টিন লেখার যেমন প্রথমে ল্যাটিনের হাত থেকে উদ্ধার করে জমান ভাষাকে পায়ের উপর দাঁড় করান, কাল্ট তেমনি পরে স্বভাষাকে ফরাসির অধীনতা থেকে নিম্প্রকৃতি দিয়ে সে ভাষাকে নিজের পায়ে চলতে শেখান। সর্বভাষায় আত্মপ্রকাশ করবার স্বাধীনতা লাভ করে জমান সাহিত্য যে কতদর ঐশবয লাভ করেছে, সে কথা বলা নিম্পপ্রয়োজন। অন্টাদশ শতাব্দীর মধ্য ভাগ থেকে আরম্ভ করে উনবিংশ শতাব্দীর মধ্য ভাগ পর্যন্ত, এই এক শত বৎসর হচ্ছে জমান সাহিত্যের সবণযগ। এ যাগের সাহিত্যরথীদের নামের ফাদ দিতে হলে পথি অসম্পভবরকম বেড়ে যায়, এবং সে ফাঁদ দেবারও কোনো দরকার নেই। কাব্য দশন ইতিহাস বিজ্ঞান প্রভৃতি সাহিত্যের সকল ক্ষেত্রে জমান মহারথীদের নাম শিক্ষিতসমাজে কার নিকট অবিদিত ? জমান প্রতিভার এই আকস্মিক এবং অভূতপবে বিকাশের প্রত্যক্ষ কারণ এই যে, জমান ভাষা এবং সেইসঙ্গে জমােন আত্মা তার স্বরাজ্য লাভ করেছে। ó অপর পক্ষে, যে গণে ফরাসি ভাষা রশীয় জমােন প্রভৃতি ভাষার উপর প্রভুত্ব করেছে, সেই গণেই তা এ যাবৎ সর্বীয় সনেীতি ও সরচি রক্ষা কলে এসেছে। ফরাসি হচেছ বড়ো ঘরের সন্তান, প্রাচীন ল্যাটিনের বংশধর ; সতরাং এ ভাষা তার আত্মজ্ঞান কখনোই হারায় নি, তার আভিজাত্যের অহংকারই তার আত্মরক্ষার কারণ হয়েছে। ফরাসি প্রভৃতি ল্যাটিন জাতিরা বহকাল যাবৎ জমানদের বাবার বলেই উপেক্ষা ও অবজ্ঞা করে এসেছিল। বর্বর শব্দের মৌলিক অর্থ হচেছ সেই জাতি, যার ভাষা