পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

दार्व्द्र खविष२ N9 OG সে বস্তু প্ৰকাশ করবার নানা” উপায় আছে, যথা, সেবিদ কক্ষপ মােছা বেশপথ শীৎকার চিৎকার প্রভৃতি। সতরাং এ কথা নিভয়ে বলা যেতে পারে যে, জ্ঞান ও চিন্তার বাহন হয়েই ভাষা তার স্বরপ ও স্বরাজ্য লাভ করে। সাহিত্যের শীর্ষস্থান অধিকার করে কাব্য, কেননা একমাত্র কাব্যেই জ্ঞানের ভাষা কমের ভাষা ও ভক্তির ভাষা, এই ত্ৰিধারার ত্ৰিবেণীসংগম হয়। তিনিই যথাৰ্থ কবিপদবাচ্য, যাঁর হৃদয়রাসের সঙ্গে বহলপরিমাণে জ্ঞানের সার, যাঁর বকের রক্তের সঙ্গে অনেকখানি মনের ধাতু অবিচ্ছেদ্যভাবে মিশ্রিত থাকে। সত্য ও সন্দর যে কারো কারো হাতে একই বস্তু হয়ে ওঠে, তার জাজবল্যমান প্রমাণ কালিদাস শেক্সপীয়ার দান্তে মিলটন গ্যেটে রবীন্দ্রনাথ প্রভৃতি মহাকবিদের কাব্য। সতরাং বঙ্গ সাহিত্যের বতর্তমান অজ্ঞান অবস্থা আমাদের কাছে মোটেই সন্তোষজনক নয়। বঙ্গসরস্বতী কালে যে আমাদের মনোজগতের অধিস্ঠিাত্রী দেবতা হবেন, এই দরাশাই আমাদের উচ্চ আশা। অতএব কি অবস্থায় এবং কি কারণে লোকভাষা পরবশ হয়ে পড়ে, আর কি ব্যবস্থায় এবং কি উপায়ে তা আত্মবিশ হয়ে ওঠে, তারও কিঞ্চিৎ আলোচনা করা দরকার। অবস্থা বঝলে, তার ব্যবস্থা করা সহজ। মাতৃভাষাকে সর্বপ্রতিষ্ঠা করবার লোভ যে আমরা কিছতেই সংবরণ করতে পারি নে, তার কারণ আমরা জানি যে “সবােম আত্মবশং সখম’ আর ‘সবং পরবশিং দঃখম’। SO জীবন্ত ভাষার উপর মতভাষার প্রভুত্বের কারণ নির্ণয় করবার জন্য ল্যাটিনের উদাহরণ নেওয়া যাক। পরোকালে ল্যাটিন যে ইউরোপের পশ্চিম ভাগের উপর একাধিপত্য করেছিল তার কারণ, সেকালে ল্যাটিন ছিল সে ভূভাগের রাজভাষা। গ্ৰীক ভাষা সে যাগের রোমানদের বিদ্যাশিক্ষার ভাষা হলেও সে ভাষা রাজভাষা নয় বলে রোমের অধীনস্থ। অপর দেশসকলে তা অপরিচিত ছিল। তবে রোমান সাম্রাজ্যের ধবংসের পরও ল্যাটিন যে আর এক হাজার বছর ধরে ইউরোপে নিবিবাদে প্রভুত্ব করে, তার কারণ রোম তার রাজত্ব হারিয়ে সবগত্ত্বি লাভ করল ; যে রোম ছিল প্রাচীন যাগের কম রাজ্যের কেন্দ্র, সেই রোম হয়ে উঠল। মধ্যযাগের ধামরাজ্যের "ইটারন্যাল সিটি' অর্থাৎ আমরাপারী। এক কথায়, রোমানরা খসেন্টধম অবলম্পােবন। করবার পর ল্যাটিন হল দেবভাষা। কোনো বিশেষ ধমের ভাষা, অর্থাৎ যিজনযাজন ধানধারণা উপাসনা-আরাধনা তন্ত্ৰমন্ত্ৰ সন্তব-সেতাত্রের ভাষা যে সেই ধমাবলম্বী লৌকিক মনের অলৌকিক শ্রদ্ধা ও ভক্তি আকর্ষণ করে, বিশেষত সে ভাষার অথ যদি জনগণের জানা না থাকে, এ সত্য তো জগদবিখ্যাত। ল্যাটিনের প্রতাপ ইউরোপে আজও অক্ষশ্ন থাকত, যদি না রেনেসাঁস এবং রিফমেশন ইউরোপের মনকে রোমান চচের একান্ত বশ্যতা থেকে মন্ত করত। মধ্যযাগের শেষ ভাগে গ্রীক সাহিত্যের আবিস্কারের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপ মানষের স্বাধীন চিন্তা ও সেইেবাপাজিত জ্ঞানের সাক্ষাৎ লাভ করলে। এর ফলে, রোমের ধামমন্দিরের অটল ভিত টলটিলায়মান হল, এবং সেইসঙ্গে ল্যাটিন ভাষারও দৈবশক্তি লোপ পাবার উপক্রম হল ।