পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বই পড়া SGS হয়। শেষটা সে যখন এই দগ্ধপানক্রিয়া হতে অব্যাহতি লাভ করবার জন্য মাথা নাড়তে, হাত-পা ছািড়তে শার করে, তখন স্নেহময়ী মাতা বলেন “আমার মাথা খাও, মরা মািখ দেখো, এই ঢোক, আর-এক ঢোক, আর-এক ঢোক’ ইত্যাদি। মাতার উদ্দেশ্য যে খব সাধ, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই; কিন্তু এ বিষয়েও কোেনা সন্দেহ নেই যে, উক্ত বলা-কওয়ার ফলে মা শািন্ধ ছেলের যকৃতের মাথা খান, এবং ঢোকের পর ঢোকে তার মরা মািখ দেখবার সম্পভাবনা বাড়িয়ে চলেন। আমাদের স্কুলকলেজের শিক্ষাপদ্ধতিটাও ঐ একই ধরনের। এর ফলে কত ছেলের সম্পথ সবল মন যে ইনফ্যাণ্টাইল লিভারে গতাস হচ্ছে, তা বলা কঠিন। কেননা দেহের মাতুর রেজিস্টারি রাখা হয়, আত্মার মাতুর হয় না। CA আমরা কিন্তু এই আত্মার অপমত্যুতে ভীত হওয়া দরে থাক, উৎফল্প হয়ে উঠি। আমরা ভাবি, দেশে যত ছেলে পাস হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচেছ; পাস করা ও শিক্ষিত হওয়া যে এক বস্তু নয়, এ সত্য স্বীকার কয়তে আমরা কুণ্ঠিত হই! শিক্ষাশাস্ত্রের একজন জগদবিখ্যাত ফরাসি শাস্ত্রী বলেছেন যে, এক সময় ফরাসিদেশে frr:FTorrivavèG8IIIz61, G (i France was saved by her idlers: অর্থাৎ যারা পাস করতে পারে নি। কিংবা চায় নি, তারাই ফ্রান্সকে রক্ষা করেছে। এর কারণ, হয় তাদের মনের বল ছিল বলে কলেজের শিক্ষা তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল, নয়। সে শিক্ষা প্রত্যাখ্যান করেছিল বলেই তাদের মনের বল বজায় ছিল। তাই এই স্কুল-পালানো ছেলেদের দল থেকে সে যাগের ফ্রান্সের যত কৃতকমা লোকের আবিভাব হয়েছিল। সে যাগে ফ্রান্সে কিরকম শিক্ষা দেওয়া হত তা আমার জানা নেই, তবও আমি জোর করে বলতে পারি যে, এ যাগে আমাদের স্কুলকলেজে শিক্ষার যে রীতি চলছে, তার চাইতে সে শিক্ষাপদ্ধতি কখনোই নিকৃষ্ঠািট ছিল না। সকলেই জানেন যে, বিদ্যালয়ে মাস্টােরমহাশয়েরা নোট দেন এবং সেই নোট মখস্থ করে ছেলেরা হয় পাস। এর জড়ি আর-একটি ব্যাপারও আমাদের দেশে দেখা যায়। এ দেশে একদল বাজিকর আছে, যারা বন্দকের গলি থেকে আরম্ভ করে উত্তরোত্তর কামানের গোলা পযন্ত গলাধঃকরণ করে। তার পর একে একে সবগলি উগলে দেয়। এর ভিতর যে অসাধারণ কৌশল আছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এই গৈলা আর ওগালানো দশকের কাছে তামাশা হলেও বাজিকরের কাছে তা প্রাণান্তপরিচ্ছেদ ব্যাপার। ও কারদানি করা তার পক্ষে যেমন কমন্টসাধ্য, তেমনি অপকারী। বলা বাহাল্য, সে বেচারা ঐ লোহার গোলাগলির এক কণাও জীৰ্ণ করতে পারে না। আমাদের ছেলেরাও তেমনি নোট নামক গািরদত্ত নানা আকারের ও নানাপ্রকারের গোলাগলি বিদ্যালয়ে গলাধঃকরণ করে পরীক্ষালয়ে তা উদগিরণ করে দেয়। এর জন্য সমাজ তাদের বাহবা দেয় দিক, কিন্তু মনে যেন না ভাবে যে, এতে জাতির প্রাণশক্তি বাড়ছে। স্কুলকলেজের শিক্ষা যে অনেকাংশে, ব্যৰ্থ, সে বিষয়ে প্রায়