পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ENGKR 5 Nadka তার পর ইউরোপের প্রাচীন কিংবা অবাচীন দর্শনের সঙ্গে যে তাঁর কোনোরাপ পরিচয় ছিল তার প্রমাণ তাঁর লেখা থেকে পাওয়া যায় না। অতএব আমাদের স্বীকার করতেই হবে যে, সে শাস্ত্রের সঙ্গে তাঁর পরিচয় থাকলেও তার শিক্ষা তাঁর মনের উপর দিয়ে অয়েলক্লথের উপর দিয়ে জল যেরকম গড়িয়ে যায়, সেই ভাবে গড়িয়ে গিয়েছিল, তাতে করে তাঁর মনকে ভেজাতে পারে নি। অতএব আমি জোর করে বলতে পারি যে, রামমোহনের cosmic consciousness ছিল। ষোলো-আনা ভারতবষীয়। সত্য কথা বলতে গেলে তিনি এ যাগে বাংলাদেশে প্রাচীন আৰ্য মন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সে মনের পরিচয় আমি এখানে দি কথায় দিতে চাই। আপনারা সকলেই জানেন যে কাণ্টের দশন তিন vicar frSS : era pure reason, frvi practical reason, VII: S3 aesthetic judgment। আমার বিশবাস, ভারতবষীয় আয্যেরা যার বিশেষভাবে চচা করেছিলেন, সে হচেছ এক pure reason, আর-এক practical reason ; এবং রামমোহনের অন্তরে এই দই reasonই পৰ্ণমাত্রায় প্রস্ফটিত হয়ে উঠেছিল। তিনি অলংকারশাস্ত্রকে কখনো দর্শনশাস্ত্র বলে গ্রাহ্য করেন নি, রসতত্ত্বকে আত্মতত্ত্ব বলে ভুল করেন নি, অর্থাৎ মানষের মনের aesthetic অংশের তাঁর কাছে বিশেষ কিছ মৰ্যাদা ছিল না। বেদান্তের ধর্ম spiritual, কিন্তু emotional নয় ; মীমাংসার ধম, ethical, কিন্তু emotional নয়। অপর পক্ষে খাস্টান বৈষ্ণব মসলমান প্রভৃতির ধমে emotional অংশ অতি প্রবল এবং সকল দেশের সকল মতি পাজার মলে। মানষের সৌন্দর্যবোধ আছে। পাছে আমার কথা কেউ ভুল বোঝেন সেইজন্য এখানে বলে রাখা আবশ্যক যে emotion শব্দ আমি মানষের প্রতি মানষের রাগদ্বেষ অর্থেই ব্যবহার করেছি, কেননা anthropomorphic ধমৰ্শমাত্রেরই সেই emotion হচেছ যগপৎ ভিত্তি ও চড়া। এ ছাড়া অবশ্য cosmic emotion বলেও একটি মনোভাব আছে, কেননা তা না থাকলে মানষের মনে cosmic consciousness জন্মােতই না। আদিরসই এ জগতে একমাত্র রস নয়, অনাদিরস বলেও একটি রস আছে ; যাঁরা এ রসের রসিক তাঁদের কাছেই উপনিষদ হচ্ছে মানবমনের গগনচুম্বাবী কীতি। বলা বাহাল্য, মানষিক মাত্রেরই মনে এই উভয়বিধ emotionএর সােথান আছে। এর মধ্যে কার মনে কোনটি প্রধান সেই অনসারেই তাঁর ধমমত আকার ধারণ করে। কিছুদিন পাবে রামমোহন রায়ের একটি নাতিদীর্ঘ জীবনচরিত ইংরেজি ভাষায় বিলাতে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থকার তাঁর নাম গোপন রেখেছেন। এ পাস্তকে তাঁর সম্পবন্ধে অনেক নাতন কথা আছে। তার মধ্যে একটি কথা হচেহ এই যে, তিনি বিলাতে গিয়ে খািস্টধমের প্রতি অনকােল হয়েছিলেন, এবং, লেখকের বিশবাস, তিনি আরো কিছদিন বেচে থাকলে সম্পভবত খস্টধম অবলম্বন করতেন। এ কথা বিশ্ববাস করা আমার পক্ষে অসম্পভব। তবে তিনি যে উক্ত ধমের সঙ্গে বিশেষ পরিচয়ের ফলে তার প্রতি অনাকাল হয়েছিলেন, এ কথা গ্রাহ্য করায় বাধা নেই। বাইবেলের যে অংশ, রামমোহনের ভাষায় বলতে হলে, “বড়াই বাড়ির কথায়’ পরিপািণ, তিনি সেই অংশের উপরেই বরাবর তাঁর বিদ্যাপবাণ বর্ষণ করে এসেছিলেন ; কিন্তু