পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাভারত ও গীতা দেশপজ্য ও লোকমান্য সবগীয় বালগঙ্গাধর তিলক মহারাষ্ট্ৰীয় ভাষায় শ্ৰীমদভগবদগীতার একখানি বিরাট ভাষ্য রচনা করেছেন, এবং মহাত্মা তিলকের অন্যুরোধে সবগীয় জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় সে গ্রন্থ বাংলায় অন্যবাদ করেছেন। ১ সে ভাষ্য যে কত বিরাট তার ইয়ত্তা সকলে এই থেকেই করতে পারবেন যে, গীতার সঙ্গত শত শেলাকের মম প্রায় সপ্তবিংশতি সহস্ৰ ছত্রে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এ ভাষ্য এত বিশাল হবার কারণ এই যে, এতে বেদ উপনিষদ ব্রাহ্মণ নিরক্ত ব্যাকরণ ছন্দ জ্যোতিষ পরাণ ইতিহাস কাব্য দর্শন প্রভাতি সমগ্র সংস্কৃত শাস্ত্রের পত্ৰখানপািখরাপে সবিচার করা হয়েছে। মহাত্মা তিলক এ গ্রন্থে যে বিপােল শাস্ত্রজ্ঞান, যে সক্ষম বিচারবদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন, তা যথার্থই অপােব। সমগ্র মহাভারতের নৈলকন্ঠীয় ভাষ্যও, আমার বিশ্ববাস, পরিমাণে এর চাইতে ছোটো। তাইতে মনে হয় যে, এ ভাষ্য মহাত্মা তিলক প্রাকৃতে না লিখে সংস্কৃতে লিখলেই ভালো করতেন। কারণ এ গ্রন্থের পারগামী হতে পারেন শােধ সব শাস্ত্রের পারগামী পন্ডিতজনমাত্র, আমাদের মতো সাধারণ লোক এ গ্রন্থে প্রবেশ করা মাত্রই বলতে বাধা হবে যে ন হি পারিং প্ৰপশ্যামি গ্ৰন্থস্যাস্য কথাগুন। সমদ্ৰস্যাস্য মহতো ভুজাভ্যাং প্রতিরক্ষরঃ॥২ ܓ মহাত্মা তিলক এ গ্রন্থের নাম দিয়েছেন। কমযোগ। কেননা তিনি ঐ সবিস্তৃত বিচারের দ্বারা প্রমাণ করেছেন যে, গীতা কমত্যাগের শিক্ষা দেয় না, শিক্ষা দেয়। কমযোগের। আর যোগ মানে যে 'কমন্স কৌশলং’, এ কথা তো স্বয়ং বাসদেব গোড়াতেই অজািনকে বলেছেন। এই ব্যাখ্যাস ত্রে আমার একটা কথা মনে পড়ে গেল। নীলকন্ঠ গীতার ব্যাখ্যা আরম্ভ করেছেন এই কাটি কথা বলে প্ৰণম্য ভগবৎপাদান শ্ৰীধরাদীংশ্চ সদাগরন সম্প্রদায়ানসারেণ। গীতাব্যাখ্যাং সমারভে ৷ নীলকণ্ঠ অতি সাদা ভাবে স্বকীয় ব্যাখ্যা সম্পবন্ধে যে কথা মািখ ফুটে বলেছেন, গীতার সকল টীকাকারই সে কথা সপলিট করে না বললেও চাপা দিতে পারেন না। সকলেই সবসম্প্রদায় অনসারে ও-গ্রন্থের ব্যাখ্যা করেন। যিনি জ্ঞানমাগের পথিক ১। শ্ৰীমদ্ভগবদগীতারহস্য। অথবা কম যোগশাস্ত্র। কলিকাতা, ১৯২৪ খী। ২ মহাভারতের উপরোন্ত শেলাকের আমি কেবল একটি শাৰদ বদলে দিয়েছি, ‘দািখস্যাস্য’ পরিবতে ‘গ্রন্থস্যাস্য’ বসিয়ে দিয়েছি। আশা করি, তাতে অর্থের কোনো ক্ষতি হয় নি।