পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ob R প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ যাঁহারা ৰাহ্যপ্রমাণকে মানেন না এবং নিজেরই সংশয়পিশাচকে অগ্রস্থান দেন, তাঁহাদের বিচারপদ্ধতি নিতান্ত অশাস্ত্রীয় সতরাং অগ্রাহ্য। মহাত্মা তিলকের মতে গীতাগ্রন্থ। ব্ৰহ্মজ্ঞানমােলক, এই ধারণা হইতেই এই সন্দেহ তো প্রথমে বাহির হয়। আমি অবশ্য আচায্যের শিষ্য নই অর্থাৎ শংকরপন্থী বৈদান্তিক নই, এমন-কি, শংকরকে প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধ বলতেও আমার তিলমাত্র দ্বিধা নেই। তবও মহাত্মা তিলকের সংগহীত বাহ্যপ্রমাণ আমার মনের সন্দেহ-পিশাচকে একেবারে বধ করতে পারে নি। এর প্রকৃত কারণ তিনিই উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, সন্দেহ নিরঙকুশ । আমি অবিশ্ববান, কিন্তু এতদ্দেশীয়’ ও আধনিক। অতএব আমার মনেও অনেক বিষয়ে সন্দেহ আছে, সে কথা বলাই বাহল্য। মনোজগতে “আধনিক’ ও ‘সংশয়গ্রস্ত’ এ দটি কথা পৰ্যায়শব্দ। যাঁর মনে কোনোরাপ সংশয় নেই তাঁর একালে জন্ম আসলে অকালে জলম; কারণ দেহে তিনি একেলে হলেও, মনে সেকেলে। এ প্রবন্ধে আমার সেই সন্দেহই আমি ব্যন্ত করতে চাই। পন্ডিতের বিচারে অবশ্য যোগদান করবার অধিকার আমার নেই, কেননা পণ্ডিত ব্যক্তিদের প্রস্থানভূমি সন্দেহ হলেও নিঃসন্দিগধ চড়িান্ত সিদ্ধান্তই হচ্ছে তাঁদের গম্যস্থান। আর তাঁরা অবলীলাব্রুমেই সেখানে পৌছে যান। অপর পক্ষে আমি মহাভারতের নানা দেশ পৰ্যটন করে অবশেষে কোনো মানসিক রাজপতনায় উপনীত হতে পারি নি। কারণ মহাভারতের ভিতর আমার পর্যটন শব্ধ "ভ্রমণ কারণ”। সতরাং আমি অপন্ডিত ও কাব্যরসিক বাঙালি হিসেবেই এ বিষয়ে একটা উচচবাচ্য করতে চাই। G আমাদের শাস্ত্র সম্পবন্ধে এই 'প্ৰক্ষিপাতী।” কথাটা চল করেছেন ইউরোপীয় পন্ডিতরা । এর একটি সাপস্ট কারণ আছে। অাঁদ্রে জিদ নামক জনৈক বিখ্যাত ফরাসি সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলির উপর একটি চমৎকার প্রবন্ধ লিখেছেন। তিনি আরম্ভেই বলেছেন যে, গীতাঞ্জলির তনতা দেখেই তিনি পলকিত হয়েছিলেন। কারণ তাঁর ভয় ছিল যে, যে দেশের মহাকাব্যের শেলাক-সংখ্যা হচেছ শত সহস্ৰ, সে দেশের গীতিকাব্যের শেলাক-সংখ্যা হবে অন্তত এক সহস্র। অাঁদ্রে জিদ সংস্কৃত জানেন না, যদি জানতেন তো তিনি মহাভারতের গোড়াতেই দেখতে পেতেন যে, লোমহর্ষণপত্ৰ উগ্ৰশ্ৰবা বলেছেন যে, বতমান মহাভারত হচ্ছে মািল মহাভারতের একটি সংক্ষিপািত সংস্করণ বিস্তীয্যেতন্মহজজ্ঞানমষিঃ সংক্ষিপ্য চাব্ৰবীৎ। লোমহর্ষণ-পত্রের এ কথা শনলে জিদ সাহেবের যে শািন্ধ লোমহর্ষণ হত তাই নয়, তিনি হয়তো মছি তা হয়ে পড়তেন। ইউরোপীয়েরা হোমারের ইলিয়াডের পরিমাণকেই মহাকাব্যের সন্ট্যান্ডাড মাপ ধরে নিয়েছেন। কিন্তু গ্রীস নামক ক্ষদ্র দেশেব পরিমাণের সঙ্গে ভারতবর্ষ নামক