পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিত্রাঙ্গদা। ܦܬܠ মন্তির প্রসাদেই মানবাত্মা আনন্দ লাভ করে। আমি পাবেই বলেছি যে, সকল দেশেই সকল যাগেই অলংকারশাস্ত্র হচ্ছে দর্শনশাস্ত্রের একটি শাখা মাত্র। সতরাং আমাদের দেশের দর্শনশাস্ত্রের মন্তির সঙ্গে কাব্যচর্চার মাত্তির জ্ঞাতিত্ব আছে ও উভয়েই সবজাতীয়। একালে জীবনের প্রতি আমাদের দার্শনিক অবজ্ঞা নেই, আছে। অন্ধভক্ত। কারণ, জীবন আমাদের পক্ষে এখন আর নিরর্থক নয়। আমরা এখন জানি যে, জীবন হচেছ ক্রমবর্ধনশীল, এবং তার চরম সার্থকতার সাক্ষাৎ পাওয়া যাবে ভবিষ্যতে। মতকে স্বগে পরিণত করবার শক্তি মানষের হাতেই আছে, সতরাং আমাদের কাম্য পদাৰ্থ মোক্ষ নয়, ভূস্বৰ্গ। জীবন আজও দঃখময়, কিন্তু আমাদের পক্ষে পরমপরিষার্থ হচেছ এই দঃখময় জীবন থেকে পলায়ন করা নয়, তাকে জয় করা। কামনাকে বশ করা জীবনীশক্তির হ্রাস করা, কারণ সে শক্তির যথাৰ্থ কাব্য হচেছ কাম্য বস্তুকে বশীভুত ও আয়ত্ত করা। এখন আমরা Evolution নামক নাতন বিশবকমার সন্ধান পেয়েছি, তাই আমরা progress নামক তার চাকা ঘোরানোকে পরমপরিষার্থ বলে মনে করি। কাল আগে ছিলেন প্রলয়কতা, ইভলিউশনের দৌলতে তিনি হয়ে উঠেছেন। সন্টিকতা। সতরাং মানষের যতপ্রকার সাংসারিক প্রয়োজন আছে তার সাধনা করাই এ যাগে যথার্থ মানবন্ধম। ফলে অর্থ কাম আমাদের আরাধ্য বস্তু হয়ে উঠেছে। তাই এ যাগে আমরা সবাই হয় economical, নয় political, নয়। Social সমস্যার হাতে-কলমে মীমাংসা করবার জন্য ব্যগ্র। ফলে কাব্য আমাদের এই-সব প্রচেস্টার কতদার সহায় কি অন্তরায়, সেই হিসেব থেকে কাব্যের মাল্য নির্ধারণ করবার প্রবত্তি আমাদের পক্ষে স্বাভাবিক। তবে দঃখের বিষয় এই যে, এ-সব দিক থেকে কাব্যের সমালোচনা করায় শািন্ধ অলপবদ্ধির পরিচয় দেওয়া হয়। কারণ এ জাতীয় সমালোচকের মনের কথা হচেছ, কাব্য থেকে কি শিক্ষা লাভ করলাম, কি আনন্দ লাভ করলাম, তা নয়। এ জাতীয় সমালোচক সেকালেও ছিল এবং তাদের লক্ষ্য করে দশ রপকার ধনঞ্জয় বলেছেন আনন্দনিস্যন্দ্দিষ রপকেষ। ব্যৎপত্তিমাত্ৰং ফলমল পাবন্ধিঃ যোহপৗতিহাসদিবদােহ সাধঃ তস্মৈ নমঃ সবাদ পরাজিমখায়। এ সংস্কৃত মত আমি শিরোধান্য করি, কেননা এই হচেছ অতি-আধনিক মত। যে মত অতিপরাতন এবং সেইসঙ্গে অতিনবতন সে মত যদি ভুল হয় তো তা নাছোড় ভুল, অর্থাৎ সত্য। রবীন্দ্রনাথ আজকের দিনে পথিবীর শীর্ষস্থানীয় কবি, সতরাং তাঁর কাব্যে আমরা সশিক্ষা অশিক্ষা কি কুশিক্ষা কোন জাতীয় শিক্ষা লাভ করি এ প্রশন অনেক সমালোচক করেছেন এবং সে-সব প্রশেনর উত্তর নিজেরাই দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ