পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ROO প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ এক কথায় এ হচ্ছে লৌকিক ভাষার অলৌকিক সংস্করণ। এ ভাষার মোহিনীশক্তির মিল হচ্ছে কবির আত্মায়। সে যাই হোক, ভাষার সঙ্গে কাব্যের এতটা আত্মীয়তা আছে যে, ইউরোপে অনেকে কবিকে a great voice বলে আখ্যা দিয়েছেন। Տ Ծ প্রাচীন আলংকারিকদের মতে কাব্যের সৌন্দয নক্ষন নয়, অলংকৃত। এমন-কি, তাঁদের মতে काव९ Iाथ भव्३यादा । বে অলংকারের গণে কাব্য গ্রাহ্য সে গািণটি কি ? বামনাচাৰ্য বলেছেন যে সৌন্দযামলংকারঃ । সৌন্দৰ্য অর্থ অলংকার, আর অলংকার অর্থ সৌন্দৰ্য্য ; এরকম ব্যাখ্যা শনে এ বিষয়ে আমরা য়ে তিমিরে আছি সেই তিমিরে থেকে যাই। আমি বালককালে একটি বঙ্গদেশীয় মসলমানের মখে একটি হররা’ ঘোড়ার কথা শনি। হররা’ অৰ্থ কি, জিজ্ঞাসা করায় তিনি উত্তর করলেন 'বোরা’। তার পর 'বোরা’ কাকে বলে প্রশন করায় তিনি বললেন 'মসকি’। এইরুপ ব্যাখ্যা শনে আমি অবশ্য তাঁর আরবি ও ফারসি ভাষায় পান্ডিত্যের যথেস্ট তারিফ করি, কিন্তু সেইসঙ্গে আমার ধারণা হয় ভদ্ৰলোক কি বলতে চান তা তিনি নিজেও জানেন না, কেননা যদি জানতেন তো ও-রঙের বাংলা নামটাই বলে দিতেন। সতরাং বামনাচাৰ্য যখন অলংকার শব্দ কি connote করে তা বলতে না পেরে কি denote করে তাই বললেন, তখন তাঁর বন্তব্য বোঝা গেল। যখন শািনলাম পােনরলংকার শব্দোহরমপমাদিষ বতাতে তখন নিশ্চিত হলাম। আমার বন্ধ শ্রীযন্ত অতুলচন্দ্র গতি কাব্যজিজ্ঞাসা নামক একটি অতি সন্দর ও সচিন্তিত প্ৰবন্ধ বাংলায় লিখেছেন। সে প্রবন্ধে তিনি দেখিয়েছেন যে, নব্য আলংকারিকদের মতে উপমাদি অলংকারের প্রাচুর্য সত্ত্বেও বাক্য কাব্য হয় না, অপর পক্ষে বহা অনলংকৃত বাক্য চমৎকার কাব্য। এর প্রমাণ সংস্কৃত সাহিত্যে দেদার আছে। কিন্তু অলংকার যে কাব্যকে শোভাহীন করে এমন কথা কোনো আলংকারিক বলতে পারেন না, তা তিনি যতই নব্য হোন-না কেন। কেননা, উপমাদি। যদি কাব্যদেহের কলঙ্ক হত তা হলে কালিদাসের কাব্য পা থেকে মাথা পযন্ত কলঙ্কিত । অতএব কোন স্থলে কিরােপ উপমাদি প্রকৃতি-সন্দর কাব্যের শোভা বদ্ধি করে, সে সম্পবন্ধে দ-চার কথা বলা আবশ্যক। আমি এ পথলে শােধ দটি মািল অলংকারের কথা বলব। একটি অন্যপ্রাস, অপরটি উপমা। সংস্কৃত মতে একটির নাম শব্দালংকার, অপরটির নাম অর্থালংকার। কিন্তু এ উভয়ই মলত সমধমীর্ণ। দন্ডী বলেছেন যয়া কয়াচিচহত্যা যৎ সমানমনভূয়তে। তদুপাহি পদাসক্তিঃ সানপ্রাসা রসাবাহা।