পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হর্ষচরিত Nq OO হর্ষচরিত লেখা হবে না। বারান্তরে বাণচরিত বর্ণনা করব, কারণ, তা করা আমার আয়ত্তের মধ্যে। বাণচরিত লিখতে কোনো চৈনিক গ্ৰন্থ কিংবা শিলালিপিব সাহায্য নিতে হবে না। C: কথার সাবিঘাতেন। কাব্যাংশস্য চ যোজনা। এ জ্ঞান সংস্কৃত কবিদেরও ছিল। তবে বাণভট্ট বোধ হয় মনে করতেন যে, হর্ষচরিতের কথায় কোনো রস নেই, তাতে যা-কিছ রস আছে, সে তাঁর লেখায়। সতরাং উন্ত গ্রন্থে কথাবস্তু অতি যৎসামান্য। অপর পক্ষে রাধাকুমদবােব লিখেছেন ইতিহাস। সতরাং বাণভট্টের রচনার ফলপাতা বাদ দিয়ে তার কথাবস্তুর উপরই তাঁর হর্ষচরিত রচনা করতে হয়েছে। আরএক কথা : বাণভট্ট যখন হর্ষচরিত শেষ করেছেন, তখন হষের ম্যাট্রিকুলেশন দেবারও বয়স হয় নি। সতরাং সে-চরিতের অন্তরে ঐতিহাসিক মাল অতি কম, আর কাব্যের মসলাই বেশি। অথচ এ গ্রন্থ উপেক্ষা করে হর্ষচরিত্যের প্রথম ভাগ লেখা অসম্পভব। আমি রাধাকুমদবাবার পদানােসরণ করে শ্রীহর্ষের বাল্যজীবন বাংলায় বলব, শােধ বাণভট্টের যে-সব কথা তিনি ইংরেজি ভাষায় লিপিবদ্ধ করেছেন, আমি সে-সব যথাসম্পভব বাণভট্টের নিজের কথাতেই বলব। এ কথা শানে ভয় পাবেন না। হর্ষচরিত অতি দবোধ হলেও বাণভট্ট কাজের কথা অতি সংক্ষেপে সহজবোধ্য সংস্কৃত ভাষাতেই বলেন। তা ছাড়া এ লেখার গায়ে একটি সেকেলে “গান্ধও থাকা চাই। পরাকালে ভারতবর্ষে শ্রীকণ্ঠ নামে একটি দেশ ছিল, এবং সেই দেশে সম্প্ৰথা"বীশবের নামক জনপদের রাজবংশে শ্রীহষ জন্মগ্রহণ করেন। এ বংশ পশুপভূতির বংশ বলে বিখ্যাত। এই বংশে প্রভাকরবর্ধন নামে একটি রাজা নিজবাহবিলে নানা দেশ জয় ক'রে পরমভট্টারক উপাধি লাভ করেন। তিনি ‘প্রতাপশীল”। এই অপর নামেও বিখ্যাত। তিনি হয়ে উঠেছিলেন হনহরিণকেশরী সিন্ধরাজজীবরো গজারপ্রজাগরঃ গান্ধারাধিপগন্ধ।দ্বিপকটেপারঙ্গলঃ লাটপাটবপাটচচরঃ মালবলক্ষীলতাপরশঃ। বাণভট্ট এ-সব শব্দযোজনা সত্যের খাতিরে কি অন্নপ্রাসের খাতিরে করেছেন, বলা কঠিন। V যদিও তাঁর কথা সত্য হয় তো সে সত্য অন্যপ্রাসের ভারে চাপা পড়েছে। প্রভাকরাবধান হনহরিণের কেশরী, সিন্ধরাজের জবর, গজারের অনিদ্রা, গান্ধােররাজরােপ গন্ধহস্তীর পিত্তজবার, লাটচোরের উপর বাটপাড়, ও মানবলক্ষীলতার কুঠার। অর্থাৎ উপরি-উক্ত রাজ্য সব তিনি জয় করন আর না করন, ও সকল রাজ্যের