পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হর্ষচরিত ROS নেই, হিউয়েন সাংএর ভ্ৰমণবাত্তান্তেও নেই। রাধাকুমদবাবা হর্ষচরিত লিখেছেন Rulers of India নামক সিরিজের জন্য। সতরাং হর্ষের শাসনপদ্ধতি সম্পবন্ধে তাঁকে একটি পরো অধ্যায় লিখতে হয়েছে। কিন্তু এ অধ্যায়টি তাঁকে এই অনমানের উপরে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়েছে যে, হর্ষব্যাগের রাজশাসন তার পােববতী গীতযাগের অন্যােরােপ ; সতরাং তিনি এ বিষয়ে যে বিবরণ দিয়েছেন, তা গীতযাগের বিবরণ- যদিও হর্ষের রাজ্য গন্তরাজ্যের মতো নিরপেদ্রব ছিল না। হিউয়েন সাংকে বহবার চােরডাকাতের হাতে পড়তে হয়েছিল, কিন্তু ফা-হিয়েনের কেউ কেশপাশ করে নি। হষের পর্বে দেশ অরাজক হয়ে পড়েছিল, আর হষের মন্ত্যুর পর আবার অরাজক হয়েছিল। ইতিমধ্যে যে তিনি দেশকে সম্পণে সশাসিত করতে পারেন নি, এতে আর আশ্চৰ্য কি ? S (O আমি পাবে বলেছি যে, রাধাকুমদবাব তাঁর হর্ষচরিত লিখেছেন রলাস অব ইন্ডিয়া নামক ইংরেজি সিরিজের দেহ পালট করবার জন্য। এ সিরিজের নামাৱলী পড়ে মনে হয় যে, ভারতবর্ষের শাসনকতা কখনো ভারতবাসী হয় না, হয় শািন্ধ বিদেশী। একমাত্র অশোক এ দলে স্থানলাভ করেছেন। ফলে অশোক যে বিদেশী, তাই প্রমাণ করতে এক শ্রেণীর পন্ডিতেরা উঠে-পড়ে লেগেছেন। রাধাকুমদবাব হর্ষকেও এই ছত্রপতি রাজাদের দলভুক্ত করেছেন। সতরাং দদিন পরে হয়তো শািনব যে, অশোক যেমন পারসিক, হর্ষ তেমনি হন। হষের মাতুলপত্র হচ্ছেন ভন্ডি, এবং হািন ভাষার পন্ডিতরা বলেন যে, ভগ্ৰিড নাম হন নাম। তা যদি হয় তো হযোির মাতৃকুল যে হন-কুল, এ অনামান করা ঐতিহাসিক পদ্ধতি-সংগত। যদি ধরে নেওয়া যায় যে, অশোক সমদ্রগপত ও হর্ষ তিনজনই সর্বদেশী রাজা ছিলেন, তা হলে এ তিনজন যে কি করে রাজা থেকে মহারাজাধিরাজ হয়ে উঠলেন, তার একটা হিসেব পাওয়া যায়। ভারতবর্ষ চিরকালই নানা খন্ডরাজ্যে বিভক্ত ছিল ; অর্থাৎ ইংরেজি ভাষায় যাকে বলে ইউনিটারি গবর্নমেন্ট, এত প্রকান্ড দেশে সে জাতীয় গবর্নমেন্ট স্বাভাবিক নয়। যখনই কোনো প্রবল বিদেশী শত্রর হাত থেকে ভারতবাসীদের পক্ষে আত্মরক্ষা করবার প্রয়োজন হয়েছে, এবং যে রাজা সে বহিঃশত্রর কবল থেকে ভারতবৰ্ষকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছেন, তখনই তিনি, সমগ্ৰ ভারতবর্ষের না হোক, উত্তরা অব্যবহিত পরেই চন্দ্রগীত মৌর্য-রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন, এবং অশোক হচেছন তাঁর পৌত্র। সমদ্রগতের পত্র চন্দ্রগতি শকারিবিক্ৰমাদিত্য। এবং যেকালে দেশ থেকে হািন-পাশ, বহিস্কৃত হয়, সেই কালেই হর্ষবর্ধন সকল উত্তরাপথেশবর হয়ে উঠেছিলেন। যবনদের হাত থেকে দেশ রক্ষা করবার জন্য মৌর্যবংশের প্রতিষ্ঠা। শকদের কবল থেকে পশ্চিমভারত উদ্ধার করবার ফলেই গন্তবংশের প্রতিষ্ঠা। আর হীন-হরিণ-কেশরী ব’লেই হর্ষ দেশের পরমেশবর হয়েছিলেন। অর্থাৎ একমাত্র