পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গভাষা বনাম বাবা-বাংলা ওরফে সাধভাষা শ্ৰীযন্ত সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভারতী পত্রিকাতে প্রকাশিত বাল্যকথা, ঢাকা রিভিউ ও সম্মিলনএর মতে অপ্রকাশিত থাকাই উচিত ছিল। লেখক যে কথা বলেছেন এবং যে ধরণে বলেছেন, দায়ের কোনোটিই সম্পাদক মহাশয়ের মতে ‘সযোগ্য লেখক এবং সংপ্ৰসিদ্ধ মাসিকের উপযোগী নয়’। শ্ৰীযন্ত সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকারের লেখা সম্পবন্ধে ভালোমন্দ কোনো কথাই আমার মাখে শোভা পায় না। তার কারণ এ স্থলে উল্লেখ করবার কোনো প্রয়োজন নেই, কেননা তা শােধ “ঘরওয়ালা ধরণের নয়, একেবারে পরোপার ঘরাও কথা। আমি যদি প্রকাশ্যে সে লেখার নিন্দা করি, তা হলে আমার কুটম্পবসমাজ সে কায্যের প্রশংসা করবে না; অপর পক্ষে যদি প্রশংসা করি, তা হলে সাহিত্যসমাজ নিশচয়ই তার নিন্দা করবে। তবে ঢাকা রিভিউ-এর সম্পাদক মহাশয় উক্ত লেখকের ভাষা সম্পবন্ধে যে মত প্রকাশ করেছেন, সে সম্পবন্ধে আমার কিছ বক্তব্য আছে । প্রথমত, সম্পাদক মহাশয় বলেছেন যে, সে রচনার নমনা যে প্রকারের ঘরওয়ালা ধরণের, ভাষাও তদ্রপ’। ভাষা যদি বস্তুবা বিষয়ের অন্যরাপ হয়, তা হলে অলংকারশাস্ত্রের মতে সেটা যে দোষ বলে গণ্য, এ জ্ঞান আমার পর্বে ছিল না। আত্মজীবনী লেখবার উদ্দেশ্যই হচ্ছে ঘরের কথা পরকে বলা। ঘরাও ভাষাই ঘরাও কথার বিশেষ উপযোগী মনে করেই লেখক, লোকে যেভাবে গলপ বলে, সেই ভাবেই তাঁর ‘বাল্যকথা’ বলেছেন। সবগীয় কালী সিংহ যে হতোম প্যাঁচার নকশার ভাষায় তাঁর মহাভারত লেখেন নি, এবং মহাভারতের ভাষায় যে হতোম পাচিার নকশা লেখেন নি, তাতে তিনি কাণ ডজজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেন নি। সে যাই হোক, শ্রীফন্তু সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পক্ষ হয়ে কোনোরাপ ওকালতি করা আমার অভিপ্রায় নয, কাবণ এ বিষয়ে বাংলার সাহিত্য-আদালতে তাঁর কোনোরাপ জবাবদিহি কববার দরকাবাই নেই। আমি এবং ঢাকা রিভিউ-এর সম্পাদক যেকালে, পর্ববঙ্গের নয। কিন্তু পােবজন্মের ভাষায় বাক্যালাপ করতুম, সেই দর অতীত কালেই ঠাকুর মহাশয় ‘সাযোগ্য লেখক' বলে বাংলাদেশে খাতি এবং প্রতিস্ঠা লাভ করেছিলেন। যে ধরণের লেখা ঢাকা রিভিউ-এর নিতান্ত অপছন্দ, সেই ধরণের লেখারই আমি পক্ষপাতী। আমাদের বাঙালি জাতির একটা বদনাম আছে যে, আমাদের কাজে ও কথায় মিল নেই। এ অপবাদ কতদর সত্য তা আমি বলতে পারি নে। তবে এ কথা নিশিচত যে, আমাদের কথায় ও লেখায় যত অধিক অমিল হয়, তত আমরা সেটি অহংকারের এবং গৌববের বিষয় বলে মনে করি। বাঙালি লেখকদের কৃপাষ বাংলা ভাষায চক্ষকর্ণের বিবাদ ক্ৰমেই বেড়ে যাচ্ছে। সেই বিবাদ ভঞ্জন ব:ববাব চেস্টাটা আমি উচিত কাব্য বলে মনে করি। সেই কারণেই এ দেশে বিদাদিগগজের "পথািলহস্তাবলোপ’ হতে মাতৃভাষাকে উদ্ধার করবার জন্য আমবা সাহিত্যক সেই মন্তপথ অবলম্বন করতে বলি, যে পথের দিকে আমাদের সিদ্ধাঙ্গনারা উৎসক