পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধভাষা বনাম চলিত ভাষা সম্প্রতি সাধভাষা বনাম চলিত ভাষা” নামক পাস্তিকাকারে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ আমার হস্তগত হয়েছে। লেখক শ্ৰীযন্ম ললিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বিদ্যারত্ন এম. এ. আমার সতীর্থ। একই যাগে একই বিদ্যালয়ে, একই শিক্ষাপ্ৰাপত লোকদের মধ্যে পরস্পরের মনোভাবে মিল থাকা কিছু আশচয্যের বিষয় নয়। বোধ হয়। সেই কারণে ভারতী পত্রিকায় প্রকাশিত যাওগ ভাষা সম্পৰ্ব্বন্ধীয় আমার প্রবন্ধটির সঙ্গে উক্ত প্রবন্ধের যে শািন্ধ নামের মিল আছে তা নয়, মতামতেরও অনেকটা মিল আছে। এমন-কি, সস্থানে স্থানে আমরা উভয়ে একই ধত্ত্বি প্রায় একই ভাষায় প্রকাশ করেছি। দািলটান্তসৰ্ব্বারাপ ললিত বােবর প্রবন্ধ হতে একটি প্যারা উদ্ধত করে দিচ্ছি যাহারা সাধভাষার অতিমাত্র পক্ষপাতী, তাহার। যদি কখনো দায়ে ঠেকিয়া একটা চলিত শম্পদ ব্যবহার করিতে বাধ্য হয়েন, তবে সেটা উদ্ধারণ চিহের মধ্যে লেখেন; যেন শব্দটা অপাঙক্তেয়, সাধভাষার শব্দগলি সংস্পশাজনিত পাপে লিপ্তত না হয়, সেই জন্য এই সাবধানতা। ইহা কি জাতিভেদের দেশে অনাচরণীয় জাতিদিগের প্রতি সামাজিক ব্যবহারের বাংলা কথাকে সাহিত্যসমাজে জাতিচু্যত করবার বিষয়ে আমার পর্ব প্রবন্ধে যা বলেছি, তার সঙ্গে তুলনা করলে পাঠকমাত্রই দেখতে পাবেন যে, আমরা উভয়েই মাতৃভাষার উপর এরােপ অত্যাচারের বিরোধী। তবে ললিতবাবার সঙ্গে আমার প্রধান তফাত এই যে, তিনি সাধভাষার সপক্ষে এবং বিপক্ষে কি বলবার আছে, অথবা কি সচরাচর বলা হয়ে থাকে, সেই-সকল কথা একত্র করে গছিয়ে, পাশাপাশি সাজিয়ে, পাঠকদের চোখের সমখে ধরে দিয়েছেন; কিন্তু পাব পক্ষের মতামত বিচার করে কোনোরাপ মীমাংসা করে দেন "ন। আর আমি উত্তর পক্ষের মািখপাত্র সম্বরপে প্রমাণ করতে চেন্টা করেছি যে, একটি পরীক্ষা করলেই দেখতে পাওয়া যায় যে, পাব পক্ষের তকীযক্তির ষোলো-কড়াই কানা। ললিতবাব দেখাতে চান যে, সমস্যাটা কি! আমি দেখাতে চাই যে, মীমাংসাটা কি হওয়া উচিত। ললিতবাব বলেছেন যে, তাঁর উদ্দেশ্য যতদর সম্পভব নিরপেক্ষভাবে বিষয়টির আলোচনা করা। তাই, যদিচ তাঁর মনের ঝোঁক আসলে বঙ্গ ভাষার দিকে, তবও তিনি পদে পদে সে ঝোঁক সামলাতে চেন্টা করেছেন। আমি অবশ্য সে ঝোঁকটি সামলানো মোটেই কতব্য বলে মনে করি নে। কোনো পক্ষের হয়ে ওকালতি করা দরে থাক, তিনি বিচারকের আসন অলংকৃত করতে অস্বীকৃত হয়েছেন। এমন-কি, এই উভয় পক্ষের মধ্যস্থ হয়ে একটা আপস-মীমাংসা করে দেওয়াটাও তিনি আবশ্যক মনে করেন নি। অপর পক্ষে, আমি বংগ সাহিত্যের পক্ষে যা শ্রেয় মনে করি, তার জন্য ওকালতি করাটা কতব্যের মধ্যে গণনা করি। সেই কারণে আমি আমার নিজের মত কেবলমাত্র প্রচার করেই ক্ষান্ত থাকি নে, সেই মতের অনসারে বাংলা ভাষা লিখতেও চেন্টা