পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अ3(द SRS কথায় করিয়াছেন, যে দাইটি কথা বলেন তাহাও খানিকটা যেন না বলিলে নয় বলিয়া। গীতগোবিন্দের মােখ্য বিষয়টি কি, তাহা আমি যেরােপ বঝিয়াছি তাহা আপনাদিগকে এতক্ষণ ধরিয়া বঝাইতে চেন্টা করিলাম, এখন আমি তাহার কাব্যাংশের দোষগণের বিচারে প্রবত্ত হইতেছি। Օ কোনো-একটি বিশেষ রচনা কাব্য কি না, ও যদি কাব্য হয় তাহা হইলে কাব্যাংশে শ্রেষ্ঠ কিংবা নিকৃষ্ণটি এ-সকল বিষয়ে মন্তব্য প্রকাশ করিতে হইলে আগে কাব্য কাহাকে বলে সে বিষয়ে কতকটা পরিমাণে পরিহুকাররােপ ধারণা থাকা আবশ্যক। আমরা প্রায় সকলেই সচরাচর কবিতা-বিষয়ে মতামত প্ৰকাশ করিয়া থাকি এবং আমাদের সকলেরই মনে কাব্য যে কি পদাৰ্থ সে বিষয়ে একটা ধারণাও আছে, সেটি যে কি তাহা ঠিক প্রকাশ করিয়া বলা অত্যন্ত কঠিন। কোনো-একটি ক্ষদ্র সংজ্ঞার ভিতর পথিবীর যাবতীয় কবিতাপািস্তক প্রবেশ করানো যায় না। দই-চারি কথায় কোনো কাব্যের সমস্ত গণের বণনা করা অসম্পভব। কিন্তু সকল কাব্যের ভিতর যেটি সাধারণ অংশ তাহা নির্ণয় করিতে পারলে তাহা যে কি, সে বিষয়ে একটি সংজ্ঞা দেওয়া যাইতে পারে। আমার বিবেচনায় আমাদের দেশে প্রচলিত 'কাব্য রসাত্মক বাক্য’ কাব্যের এই সংজ্ঞায়, সকল কাব্যের ভিতর যেটি সাধারণ অংশ অর্থাৎ যাহার অভাবে কোনো রচনা কাব্য হইতে পারে না, সেইটি অতি সন্দরভাবে ব্যক্ত করা হইয়াছে। , এই অলপসংখ্যক কথা-কয়েকীটির মধ্যে কি ভাব নিহিত আছে তাহা খালিয়া বঝাইয়া দিলে বোধ হয় আপনারাও আমার কথা কতক পরিমাণে গ্রাহ্য করবেন। ‘রসাত্মক বাক্য’-এই কথা কয়েকটির যথাৰ্থ অৰ্থ বঝিতে হইলে রস আত্মা ও বাক্য এই শব্দগলির অর্থ জানা আবশ্যক। প্রথমত, ‘বাক্য’ এই শব্দ লইয়াই আরম্ভ করা য়াউক ; আমরা দেখিতে পাই বাক্যের দাইটি অংশ আছে। প্রথম, অৰ্থ ; দ্বিতীয়, শব্দ। প্রথমাংশ মানসেন্দ্ৰিয়গ্রাহ্য ; দ্বিতীয়াংশ শ্রবণেন্দ্রিয়গ্রাহ্য। যে শব্দ কানে শনিয়া অন্তরে তাহার অর্থ গ্রহণ করি তাহাই বাক্য। বাক্যের বিষয় মানষের মনোভাব। বাক্যের উদ্দেশ্য তাহা, প্রকাশ করা এবং উক্ত উদ্দেশ্যসাধনের উপায় শব্দ । সতরাং বাক্য রসাত্মক হইতে হইলে, প্রথমত, ভাব রসাত্মক হওয়া আবশ্যক ; দ্বিতীয়ত, শব্দ রসাত্মক হওয়া আবশ্যক ; তৃতীয়ত, এরপভাবে প্রকাশ করা কতব্য যাহাতে রসাত্মক ভাব রসাত্মক শব্দের সহিত সম্পণেরপে মিশ্রিত হইতে পারে। শব্দের রস কি ? অবশ্য শ্রতিমধরতা; যেমন সংগীতে একটি সরে আর-একটি

  • যেকালে এ প্রবন্ধ লেখা হয়, সেকালে সংস্কৃত অলংকারশাস্ত্রের কোনো গ্রন্থ আমি চোখে দেখি নি, এমন-কি, তাদের নাম পর্যন্ত শনি নি, সেই কারণে উক্ত শাস্ত্রীয় বাক্যটি আমি আমাদের দেশে প্রচলিত বাক্য বলে উল্লেখ করতে বাধ্য হয়েছিলাম।- লেখক। ১৩২৭