পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

KO O 8 প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ সতরাং এ অনামান করা অসংগতি হবে না যে, সে সভ্যতার জন্মভূমি হচ্ছে এশিয়া, আর সেকালে ইজিপট ছিল এশিয়ার একটি উপনিবেশ। এর থেকে তোমরা বঝতে পারবে যে, কোনো দেশের ইতিহাস বঝতে হলে সে দেশের জিয়ােগ্রাফিও আমাদের জানা চাই। এ যাগের মানষে জিয়োগ্রাফির তােদশ অধীন না হলেও আদিতে যে বিশেষ অধীন ছিল, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ভারতবর্ষের ইতিহাস জানতে আমরা সবাই উৎসক। সে ইতিহাস ভারতবর্ষের জমির উপরেই গড়ে উঠেছে, সেইজন্যই সেই জমির সঙ্গে তোমাদের পরিচয় করিরে দিতে আমি উদ্যত হয়েছি। এখন এই-কটি কথা তোমরা মনে রেখো যে, এ পথিবী সৌরমন্ডলের অন্তভূতি ও তার সঙ্গে নানারপ যোগসমূত্রে আবদ্ধ। তার পর এই পথিবীর উত্তরাখন্ডে ইউরেশিয়া অবস্থিত। আর এই মহাদেশের যে অংশকে আমরা এশিয়া বলি, ভারতবর্ষ তারই একটি ভূভাগ। আর এই ভমভাগের রাপগণ বর্ণনা করাই এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য। প্রথমে সৌরমণ্ডল থেকে পথিবীকে ছাড়িয়ে নিয়ে, তার পর পথিবী থেকে তার উত্তরাখন্ডকে ছাড়িয়ে নিয়ে, তার পর তার উত্তরাখন্ড থেকে ইউরেশিয়াকে ছাড়িয়ে নিয়ে, তার পর ইউরেশিয়া থেকে এশিয়াকে পথক করে নিয়ে, তার পর এশিয়া থেকে অপরাপর দেশকে বাদ দিলে। তবে আমরা ভারতবর্ষ পাই। এ দেশ অপরাপর দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন না হলেও বিভিন্ন। সতরাং একে একটি স্বতন্ত্র দেশ হিসেবে ধরে নিয়ে তার বর্ণনা করা যায়। আমি পাবে বলেছি যে, বিদেশের সামান্য জ্ঞান না থাকলে সবদেশেরও বিশেষ জ্ঞান লাভ করা যায় না। এ কথা সত্য। কিন্তু অপর পক্ষে এ কথাও সমান সত্য যে, সত্বদেশের বিশেষ জ্ঞান না থাকলে বিদেশের সামান্য জ্ঞান লাভ করা কঠিন। ও ক্ষেত্রে আমরা নাম শিখি, কিন্তু দেশ চিনতে শিখি নে। এই কারণে আজকাল এক শ্রেণীর বৈজ্ঞানিক বলেন যে, প্রথমে বাড়ির জিয়োগ্রাফি শিখে, তার পর দেশের জিয়োগ্রাফি শেখাই কতব্য। কারণ ছোটোর জ্ঞান থেকেই মানষেকে বড়োর জ্ঞানে অগ্রসর হতে হয়, ঘর থেকেই বাইরে যেতে হয়। আমি যে এ প্রবন্ধে তার উলটো পদ্ধতি অবলম্পাদন করেছি, বড়ো থেকে ছোটোতে, বাইরে থেকে ঘরে আসছি, তার প্রথম কারণ আমি বৈজ্ঞানিক নাই- সাহিত্যিক; আর তার দ্বিতীয় কারণ, আমি তোমাদের মনে এই সত্যটি বসিয়ে দিতে চাই যে, ভারতবর্ষ একটা সন্টিছাড়া দেশ নয়। এশিয়া এশিয়া ব'লে ইউরোপ থেকে কোনো পথিক মহাদেশ নেই, এ কথা তোমাদের পাবেই বলেছি। কিন্তু বহকাল থেকে মানষে এই এক মহাদেশকে দই মহাদেশ বলে আসছে। ভৌগোলিক হিসাবে না হোক, লৌকিক মতে এশিয়া একটি সর্বতন্ত্র মহাদেশ বলে যখন গ্রাহ্য, তখন এ ভূভাগকে একটি পথিক মহাদেশ বলে মেনে নেওয়া যাক । ভারতবর্ষ এই মহাদেশের অন্তভূতি, অতএব এশিয়ার চেহারাটা একনজর দেখে ८«3 । ।