পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তেল নন লকড়ি OOS সকলেরই নিকট সপরিচিত। চেয়ার টেবিল কোঁচ টিপয় পিয়ানো আয়না, ছিটের পরদা, ব্রাসেলসের কারপেট, চীনের পাতুল, ওলিয়োগ্রাফের ছবি-এই আমাদের নািতন সভ্যতার উপকরণ এবং নিদশন। গহন্থের অবস্থা অনসারে এই-সকল উপকরণ হয়। লাজারস এবং অসল্যের, নয়। বৌবাজারের বিক্লিওয়ালার দোকান হতে সংগ্ৰহ করা হয়। যিনি ধনী, তাঁর গহ হঠাৎ দেখতে দোকান বলে ভুল হয়। আর যিনি লক্ষীর কৃপায় বণ্ডিত, তাঁর গহ হঠাৎ দেখতে যািধক্ষেত্রের হাসপাতাল বলে ভ্রম হয়; আসবাবপত্র সব যেন লড়াই থেকে ফিরে এসে, হয় মেরামত, নয়। দেহত্যাগের ठey Coभिी द50ध्ये । কোনো চৌকির হাত নেই, কোনো টিপয়ের পা নেই, কোনো টেবিলের পক্ষাঘাত হয়েছে; পরদার বক্ষ বিদীর্ণ হয়ে গেছে, কোঁচের নাড়িভুড়ি নিগত হয়ে পড়েছে, চীনের পতুলের ধড় আছে কিন্তু মন্ড নেই, পারিস পালে, সীতারার ভিনাসের নাসিকা লগত, ওলিয়োগ্রাফ-সন্দরীর মখে মেচেতা পড়েছে, আয়নার গা দিয়ে পারা ফটে বেরিয়েছে, পিয়ানো দন্তহীন এবং হারমোনিয়ম শবাসরোগগ্ৰস্ত। এ অবস্থাতেও আমরা এই-সকল অব্যবহার্য বস্তদয আব্বজনা দাির করে তার পরিবতে ফরাশ বিছিয়ে বাস না কেন ?- কারণ ইংরেজের কাছে আমরা শিখেছি যে দৈন্য পাপ নয়, কিন্তু স্বদেশীয়তা অসভ্যতা। আমাদের এই নবসভ্যতার আজবঘরে সবগীয় পিতামহগণ যদি দৈবাৎ এসে উপস্থিত হন, তা হলো নিঃসন্দেহ সব দেখেশানে তাঁদের চক্ষস্থির হয়ে যাবে। অবাক হয়ে তাঁরা উধাবনেত্ৰে চেয়ে থাকবেন, নিবাক হয়ে আমরাও অধোবদনে বসে থাকব। উভয় পক্ষে কোনো বোঝা-পড়া হওয়া অসম্ভব। অপরিচিত অশন-বসন আসন-ভুষণের ভিতয়ে কিরাপে জাতি রক্ষা হয়, তা তাঁরা বঝতে পারবেন না; কৈফিয়ত চাইলে আমাদের মধ্যে যাঁর কিছ বলবার আছে তিনি সম্পভবত এই উত্তর দেবেন যে, ‘জাতি শব্দের অর্থ আপনাদের নিকট সংকীর্ণ ছিল, আমাদের নিকট তা প্রশস্ততর হয়েছে; রক্ষা অর্থে আপনারা বঝতেন। শােধ স্থিতি, আমরা বঝি উন্নতি; আপনাদের গাের ছিল মন, আমাদের গর, হাবাৰ্ট স্পেনসার ; আমাদের নাতন চাল আপনাদের হিসাবে জাতিরক্ষার প্রতিকল, কিন্তু আমাদের হিসাবে অনাকাল।” এ কথা যদি সত্য, যদি বিজ্ঞানসম্মত হয়, তা হলে আমার আপত্তির কোনো কারণ নেই; কেননা যে প্রথা অবলম্বন করলে ব্ৰাহ্মণ-শদ্রের, এমন-কি, হিন্দমাসলমানের মধ্যে আচার-ব্যবহারের চিরবিরোধ থেকে যাবে, আমার পক্ষে সে প্রথার পক্ষপাতী হওয়া অসম্ভব। যে সামাজিক শাসন জাতীয় জীবনের প্রসারতা লাভের বিরোধী, আমি তার সম্পপণ্য বিরোধী। কিন্তু আমাদের সমাজকে যে ইউরোপের পশ্চাদ্ধাবন করতেই হবে তার কোনো প্রমাণ নেই। গতিমাত্রেরই একটি স্বতন্ত্র প্রস্থানভূমি আছে, একটি দিক নিদিন্ট আছে, যা তার পর্বাবস্থার স্বারা নিয়মিত। উন্নতির অর্থ আকাশে ওড়া নয়। কোন দেশে জন্মগ্রহণ করি সেটা যেমন আমাদের ইচ্ছাধীন নয়, তেমনি কোন সমাজে জন্মগ্রহণ করি সেও আমাদের ইচ্ছাধীন নয়। পরিবতন যেমন কালসাপেক্ষ, পরিবর্ধন তেমনি দেশ ও পাত্র -সাপেক্ষ। আমাদের প্রত্যেকেরই দেহ ও মনের মলে পােবীপরাষরা বিরাজ করছেন, এবং আমাদের জাতীয় সভ্যতা অর্থাৎ সামাজিকতার মিলে পবর্ণপরিষদের সমাজ বিরাজ করছে। বংশপরম্পরা