পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

୪୫୩ <! ՀG: বলিতেছেন যে বসন্তে বিরহীগণ বিলাপ করিতেছেন; সেই শেলাকের আর-একটি চরণে ‘অলিকুল কর্তৃক বকুলকলাপ অধিকারের কথা উল্লেখ করিয়াছেন। এ দায়ের ভিতর যে কি স্বাভাবিক মিল তাহা আমি বঝিতে পারি না। তাঁহার উদ্দেশ্য, বসন্তে যে মদন-রাজার অধিকার বিস্তৃত হইয়াছে তাহাই বৰ্ণনা করা। কিন্তু কেবলমাত্র কোনো ফলকে মদন-রাজার নখ এবং অন্য অপর আর-একটিকে বিরহীদিগের হদয়বিদারণের অস্ত্রস্বরূপ বলিলেই সে উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় না। যথার্থ মদনবিকারের ভাব কিসে ফটিয়া উঠে তাহা আমি কালিদাসের একটিমাত্র শেলাক উদধিত করিয়া দেখাইতেছি।-- মধ্য দিবরেফঃ কুসমৈকপাত্রে পপেী প্রিয়াং স্বামন বৰ্তমানঃ। শব্দেগণ চ সপশনিমীলিতাক্ষীং মােগীমকন্ডয়ত কৃষ্ণসারঃ৷ উক্ত শেলাকে কালিদাস মদনের নখ দরে যাউক তাঁহার নাম পর্যন্ত উল্লেখ করেন নাই, তথাপি প্ৰেমরসমত্ততার কি চমৎকার চিত্র অকিয়াছেন। সমগ্ৰ ভাবের কথা ছাড়িয়া দিলেও জয়দেব এমন একটিমাত্রও শোলাক রচনা করিতে পারেন নাই যাহাতে কোনোএকটি পদার্থের সজীব চিত্র আমাদের চোখের সম্পমাখে। ধরিয়া দেওয়া হইয়াছে। প্রকৃতিবর্ণনাতেও যেরপে সন্ত্রীপরিষের রপবর্ণনাতেও তিনি ঠিক সেইরােপ অক্ষমতার পরিচয় দিয়াছেন। কালিদাস उादछद्धिका कर्गgाद अन्छन्ाख्ा९ বাসো বসােনা তরুণাকারাগম। পর্যাতিপক্ষপস্তবকাবনমা সঞ্চারিণী পল্লবিনী লতেব ৷ এই একটিমাত্র শেলাকে সমগ্ৰ উমাকে কত সন্দরভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। জয়দেব এইরুপ দই-চার কথায় একটি স্ত্রী কিংবা পরিষের সমগ্ৰ চিত্র বর্ণনা করিতে একান্ত অপারগ। তাঁহার বিশ্ববাস পদ্মের ন্যায় মাখ, তিলফলের ন্যায় নাসিকা, ইন্দীবারের ন্যায় নয়ন এবং বান্ধলির ন্যায় অধর- এই-সকলের একটি সমন্টি করিলেই সন্দরীর মখ নির্মাণ করা যায়। উক্ত বিশবাসে ভর করিয়া সন্দর-কবি বিদ্যাকে একটি পদ্মের সহিত তিলফােল নীলোৎপল বান্ধ লিপপ এবং কুন্দকলিকা ইত্যাদি অতি কৌশলসহকারে সংযোজনা করিয়া যে অপােব মতি নিমাণ করিয়া উপহারস্বরাপ পাঠাইয়াছিলেন তাহা অবশ্য জয়দেবের নিকট তিলোত্তমার মািখ বলিয়া গণ্য হইতে পারিত। উক্তপ্রকার বিশ্ববাসের উপর আমার কোনোই আক্ৰোশ নাই, যিনি ইচ্ছা! করেন অনায়াসে তিনি ঐ-সকল ফল জোড়াতাড়া দিয়া যখন-তখন মনের সখে সন্দেরীর রূপবর্ণনা করিয়া কবিতা লিখিতে পারেন। কেবল এইটিমাত্ৰ মনে রাখিলেই আমি সন্তুষ্ট থাকিব যে, পদ্ধতি অনসারে চলিলে মাথামান্ড কিছই বৰ্ণনা করা যায় না। তার পর জয়দেবের উপমার বিষয় কিছ বলিতে ইচ্ছা করি। প্রথমত আমরা দেখিতে পাই যে জয়দেবের উপমাসকল প্রায়ই নেহাত পড়ে-পাওয়া-গোছের।