পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তেল নন লকড়ি O80 স্থান না পায় তখন তা আটের নিকট গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে। ধম সম্পর্বমেঘ আলোচনায় ‘আমি বিশ্ববাস করি।” এ কথার উপর। যেমন আর কোনো কথা চলে না, আট সম্পবন্ধে আলোচনায় ‘আমার চোখে সন্দর লাগে’ এ কথার উপরও তেমনি আর কোনো কথা চলে না। সৌন্দৰ্য অনভূতির বিষয়, জ্ঞানের বিষয় নয়। ন্যায়শাস্ত্র অনসারে তার প্রমাণ দেওয়া যায় না। অতএব যিনি আর্ট জিনিসটা অপরকে যত কম বোঝাতে পারেন, নিজে তিনি তত বেশি বোঝেন। ধম সম্পবন্ধে বিশ্ববাস অন্ধ হলেও সম্পভবত লোক ধমভিজ্ঞ হতে পারে, কিন্তু রােপ সম্পবন্ধে অন্ধ হয়ে লোকে সৌন্দযজ্ঞ হতে পারে না। কারণ সৌন্দয সর্বপ্ৰকাশ। সৌন্দয্যের পরিচয় এবং অস্তিত্ব উভয়ই কেবলমাত্র প্রকাশের উপর নিভাির করে। সেই পদার্থকে আমরা সন্দর বলি, যার সাবরােপ পণ্য ব্যক্ত হয়েছে। রূপ হচ্ছে বিশোবর-ভাষা এবং সৌন্দৰ্য সন্টির শেষ কথা। প্রকৃতিও ব্যথায় কিছ করেন না, মানষেও বিনা উদ্দেশ্যে কোনো পদার্থে হাত দেয় না। যা মানবজীবনের পক্ষে আবশ্যকীয়, মানষে তাই হাতে গড়ে ; সেই গঠনকায্যের সার্থকতা এবং কৃতাৰ্থতার নামই আট। নিরর্থক দ্রব্য সন্দর হয় না। আবশ্যকতার বিরহে সৌন্দৰ্য শকিয়ে মারা যায়। সতরাং যে জাতির পক্ষে যে-সকল জিনিস জীবনযাত্রার জন্যে আবশ্যকীয় নয়, সে জাতির পক্ষে সে-সকল জিনিসের সৌন্দৰ্য উপলব্ধি করা কঠিন। আর্ট একটি সন্টিপ্রকরণ, একটি ব্রুিয়া মাত্র, সতরাং আর্টের প্রাণ কতার হাতে এবং মনে, ভোক্তার চোখে এবং কানে নয়। আর্টের সন্ধান তার প্রস্টার কাছে মেলে, দশক কিংবা শ্রোতার কাছে নয়। সৌন্দয সন্টি করবার ভিতর যেটকু আনন্দ প্রাণ ও ক্ষমতা আছে, সেইটকু অনভব করার নাম সৌন্দৰ্য ভোগ করা। এ কথা যদি সত্যু হয়, তা হলে যে আটি সেন্টর সঙ্গে আমাদের চরিত্রের, ধম এবং জ্ঞানের, রীতি এবং নীতির মিল আছে, আমরা অনেক পরিমাণে যার সখদঃখের ভাগী, যার সঙ্গে আমরা একই বাহ্যপ্রকৃতির ভিতর একই সমাজের অন্তর্ভূত হয়ে বাস করি, তার আর্টই আমাদের পক্ষে যথাৰ্থ আট। বিদেশী এবং বিজাতীয় আটের আদর কেবল কালপনিক মাত্ৰ ॥৫ এই কারণেই আমাদের অনেকেরই পক্ষে বিদেশী আর্টের চাচাটা লাঞ্ছনা মাত্র হয়ে পড়ে। আমরা প্ৰথমে বিদেশনী দোকানদারের দ্বারা প্রবর্ণিগুত হই, পরে নিজেদের মনকে প্রবঞ্চিত করি। আমাদের কাছে রাপের পরিচয় রাপিয়া দিয়ে। আমরা ছবি চিনি নে, তব কিনি নাম দেখে এবং দাম দেখে। ইউরোপে যারা শিব গড়তে বাঁদর গড়ে, তাদেরই হস্তরচিত বিগ্রহ আমরা সংগ্রহ করে সখী না হই, খশি। থাকি। আর্ট সম্পবন্ধে ইউরোপের গোলামচোর হওয়ার লজা পাওয়া দরে ষাক, আমাদের আত্মমযাদা বদ্ধি পায়। আমার মতের বিরদ্ধে সহজেই এই আপত্তি উত্থাপিত হতে পারে যে, আমরা যদি ইউরোপীয় আর্টের মযাদা না বঝতে পারি, তা হলে ইউরোপীয় সাহিত্য ও বিজ্ঞানের মর্যাদা বোঝা আমাদের পক্ষে অসম্পভব। সতরাং ইউরোপীয় সাহিত্যবিজ্ঞান-চৰ্চাও আমাদের ত্যাগ করা কতব্য। এ আপত্তির উত্তরে আমার বক্তব্য এই যে, বিভিন্ন দেশের লোকের ভিতর পার্থক্য যতই থাকুক, মানষে মানষে প্রবত্তিম বাসনার মনোভাবের মিলও যথেস্ট আছে। সাহিত্যের বিষয় হচ্ছে প্রধানত মানব