পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তেল নন লকড়ি W86 খোসাপাের জাত। ভগবান ইংরেজকে নিতান্ত স্থলভাবে গড়েছেন; তার দেহ সথল, প্রকৃতি পথািল, ইন্দ্ৰিয়ও তােদশ সক্ষম নয়। বস্তুমাত্রেই ইংরেজের হাতে ধরা পড়ে, কিন্তু রপমাত্রেই ইংরেজের চোখে কিংবা কানো ধরা পড়ে না। সচরাচর শিক্ষিত ইংরেজের চেয়ে আমাদের দেশের সচরাচর রঙ্গরেজের চোখ রঙ সম্পবন্ধে অনেক বেশি পরিমাজিত। এই কারণেই বিলাতের নিত্যব্যবহায্য দ্রব্যজাতসকল নয়নের তৃপিতিকর নয়। এই গোড়ায়গলদ থাকবার দরবন, ইংরেজের হাতগড়া জিনিস প্রায়ই আর্টিসটিক হয় না। ইউরোপের অন্যান্য জাতিসকল এ বিষয়ে ইংরেজের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হলেও অপর আর-একটি কারণে ইউরোপের আর্টের আজকাল হীনাবস্থা। ইউরোপে এখন বিজ্ঞানের যােগ। পাবেই বলেছি, বিজ্ঞান বিশবকে একভাবে দেখে, আর্ট আর-একভাবে দেখে। বিজ্ঞানের চেষটা সোনামঠোকে ধলোমঠো করা, আর্টের চেন্টা ধলোমঠোকে সোনামঠো করা। বিজ্ঞান আজকাল ইউরোপীয় মানবের মনের উপর অযথা প্রতিপত্তিলাভ করেছে, কেননা বিজ্ঞান এখন মানষের হাতে আলাদিনের প্রদীপ। সে প্রদীপের সাহায্যে যে শািন্ধ অসীম ঐশবয লাভ করা যায়। তাই নয়, আলোকও লাভ করা যায়। সে আলোকে শােধ প্রকাশ করে বিশেবর কায়া, বাদবাকি সব ছায়ায় পড়ে যায়, যথা-মন প্রাণ ইত্যাদি। সেই বিজ্ঞানের আলোককে আমরা যদি একমাত্র আলোক বলে ভ্ৰম করি, তা হলে মানবজীবনের প্রকৃত অৰ্থ, চরম লক্ষ্য এবং আচুৰ্যত আনন্দ হতে আমরা বিচুত হয়ে পড়ি। বিশবকে শােধ জড়ভাবে দেখলে মনেরও জড়তা এসে পড়ে। কেবলমাত্র পরমােণর সম্পন্দনে হৃদয় সপন্দিত হয় না। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, ধমের সখী হয়েই কলাবিদ্যা পথিবীতে দেখা দেয়। সে সখ্যবন্ধন ছিন্ন করে আর্টকে জীবন্ত রাখা কঠিন! বৈজ্ঞানিক জীবতত্ত্বের মতে মানবের আদিম চেন্টা নিজের এবং জাতীয় জীবন রক্ষা করা। নিজে বেচে থাকা এবং সন্তান উৎপাদন করা, এই দটি জীবজগতের মািল নিয়ম। এই দটি আদিম দৈহিক প্রবত্তির চরিতার্থতা সাধন যদি জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে ওঠে, তা হলে "আবশ্যকতা’র অর্থ অত্যন্ত সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। যা দেহের জন্য আবশ্যক তাই যথার্থ আবশ্যকীয় বলে গণ্য হয়, আর যা মনের জন্য আত্মার জন্য আবশ্যক, তা আবশ্যকীয় বলে মনে হয় না। ইউরোপে ইউটিলিটির এই সংকীর্ণ অর্থ গ্রাহ্য হবার দরুন ইউটিলিটি এবং বিউটির বিচ্ছেদ জন্মেছে। ইউরোপের আবশ্যকীয় জিনিস কদয এবং সন্দর জিনিস অনাবশ্যক হয়ে পড়েছে। এই কারণে আর্ট এখন ইউরোপে ত্ৰিশঙ্কুর মতো শহন্যে ঝলছে। আহার বিহার এখন ইউরোপের প্রধান কাজ হয়ে ওঠার দরন, যে আর্টিসন্ট আর্টকে জীবনের ভিতর নিয়ে আসতে চান। তিনি আর্টকে পাবোেন্ত প্রবত্তিদ্বয়ের দাসী করে তোলেন। এই কারণেই ইউরোপে এখন নগন স্ত্রীমতির এত ছড়াছড়ি। শতকরা একজনে যদি ঐরাপ মাতিতে সৌন্দয খোঁজেন, অবশিষ্ট নিরানব্বই জনে তার নগ্নতা দেখেই খশি থাকেন। এ অবস্থায় আর্ট যে শােধ ভোগবিলাসের অঙ্গ হয়ে উঠবে, তার আর আশ্চযা কি। ইউরোপের পক্ষে কি ভালো কি মন্দ, তা ইউরোপ স্থির করবে। কিন্তু এ কথা সকলেই স্বীকার করতে বাধ্য যে, আমাদের জাতির পক্ষে বিলাসের প্রবত্তি আর বাড়ানো ইচ্ছনীয় নয়। ইউরোপের যথাৰ্থ আর্ট আমাদের অধিকাংশ