পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

K96ኔ ሆ প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ আজ পর্যন্ত হয় নি। যা একেবারে নিগণ কিংবা একেবারে নির্দোষ। কোনো একটি বিশেষ সভ্যতার বিচার করবার জন্য তার দোষগণের পরিচয় নেওয়া আবশ্যক, মনকে খাটানো দরকার। যখন আমরা আলস্যে অভিভূত হয়ে হাই তুলি তখনই আমরা তুড়ি দিই, সতরাং আমরা যখন তুড়ি দিয়ে কোনো জিনিস উড়িয়ে দিতে চাই তখন আমরা মানসিক আলস্য ব্যতীত অন্য কোনো গণের পরিচয় দিই না। এ সত্য অবশ্য চিরপরিচিত; কিন্তু দঃখের বিষয় এই যে, পথিবীতে যা চিরপরিচিত। তাই চিরউপেক্ষিত। R ইউরোপের বর্তমান সভ্যতার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ এই যে, যে মনোভাবের উপর সে সভ্যতা প্ৰতিস্ঠিত এই মহাসমর হচ্ছে তার স্বাভাবিক পরিণতি; কেননা এ যাগে ইউরোপ ধমপ্ৰাণ নয়, কমপ্রাণ। সে দেশে আজ আত্মার অপেক্ষা বিষয়ের, মনের অপেক্ষা ধনের মাহাত্ম্য ঢের বেশি। শিল্প-বাণিজ্যের পরিমাণ-অনসারেই এ যাগে ইউরোপের জাতীয় শ্রেষ্ঠত্বের পরিমাপ করা হয় এবং সে দেশের লোকের বিশবাস যে, মানবের ভ্রাতৃভাব নয়। ভ্ৰাতৃবিরোধই হচ্ছে ব্যক্তিগত ও সামাজিক অভু্যদয়ের একমাত্র উপায়। অতএব এই যন্ধ হচ্ছে ইউরোপের আজ একশো বৎসরের কমফল।। এ অভিযোগের মহলে যে কতকটা সত্য আছে তা অস্বীকার করা যায় না; কিন্তু कऊप्ने, उलाग्ने श्Cछ दि5ाश् । আমরা মানবসভ্যতাকে সচরাচর দই ভাগে বিভক্ত করি; প্রাচীন ও নবীন। কিন্তু পথিবীতে এমন-কোনো বত মান সভ্যতা নেই। যা অনেক অংশে প্রাচীন নয়। যেমন আমাদের বতর্তমান সভ্যতা কিংবা অসভ্যতা এক অংশে প্রাচীন হিন্দ এবং আর-এক অংশে নব্য ইউরোপীয়, তেমনি ইউরোপের বর্তমান সভ্যতা আট-আনা নতুন হলেও আট-আনা পরনো। সতরাং এই যন্ধের জন্য ইউরোপের নবমনোভাবকে সম্পপণ্য দায়ী করা যেতে পারে না, বরং তার পদবীসিংস্কারকেই এর জন্য দোষী করা অসংগত হবে না। মানষে-মানষে কাটাকাটি-মারামারি করা যদি অসভ্যতার লক্ষণ হয় তা হলে বলতে হবে ইউরোপের বর্তমান যাগের অপেক্ষা মধ্যযােগ ঢের বেশি অসভ্য ছিল। সে যাগে যািন্ধপােবন বারো মাসে তেরো বার হত এবং সে কালের মতে ও-কাৰ্যটি নিত্যকমের মধ্যে গণ্য ছিল। মধ্যযাগকে ইউরোপীয়েরা কৃষ্ণযােগ বলেন, কিন্তু আসলে সেটি রক্তব্যগ। আমরা আমাদের বতর্তমান মনোভাব্যবশতই যাদ্ধকাৰ্যটি হেয় মনে করি, প্রাচীন মনোভাব থাকলে শ্রেয় মনে করতুম। ইউরোপের নবযােগ অবশ্য এক হিসাবে যন্ত্রযাগ, কিন্তু তাই বলে মধ্যযােগ যে মন্ত্রযাগ ছিল, তা নয়। যে হিসাবে মধ্যযােগ ধর্মপ্রাণ ছিল সে হিসাবে নবযােগ ধমপ্ৰাণ নয়। সে হিসাবটি যে কি, তা একটি পরীক্ষা করে দেখা আবশ্যক। বৌদ্ধধমের মতো খাস্টধমেরও ত্রিরত্ন আছে- সে হচ্ছে খাস্ট ধম ও সংঘ; এবং খসিল্টয়ান মাত্রেই নামমাত্র এই তিনের শরণ গ্রহণ করেন। কিন্তু যােগভেদে এই তিনের মধ্যে এক-একটি রত্ন সবাপেক্ষা মহামল্য হয়ে ওঠে।