পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৰ্তমান সভ্যতা বনাম বৰ্তমান যন্ধ KO V SO সঙ্গে আর-সকলের প্রভেদ এইখানে যে, জমানির কর্তৃপক্ষদের মতে জাতীয় উন্নতির পথ পরিস্কার করবারও একমাত্র উপায় হচ্ছে তরবারি। জমানির যোদ্ধাদলের মািখপাত্র জেনারেল বেয়ােরনহাডি অতি পন্টাক্ষরে দনিয়ার লোককে জমান রাষ্ট্রনীতির মািলকথা জানিয়ে দিয়েছেন। সে কথা এই-- জন্মানজাতি গত ত্রিশ-চল্লিশ বৎসরের মধ্যে শিলপবাণিজ্যে যে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে তার থেকেই প্রমাণ হয় যে, কি বাহবিলে, কি বন্ধিবলে সে জাতির সমকক্ষ দ্বিতীয় জাতি পথিবীতে নেই। জমানির শ্ৰীবন্ধি তার বাণিজ্যবিস্তারের উপর নিভাির করে। যদিচ ভবের হাটে কেনাবেচার জন্য জমানজাতিই হচ্ছে জ্যেষ্ঠ অধিকারী তবও এ ক্ষেত্রে সকলের শেষে উপস্থিত হওয়ার দরুন সে আজ সবকনিষ্ঠ, কেননা পথিবীর সকল হাটবাজার আজ অপরের সম্পত্তি। পরের হাটে কেনাবেচা করার অর্থ পরিভাগ্যোপজীবী হওয়া; সতরাং এ পথিবীতে আত্মপ্রতিষ্ঠা করবার জন্য জমানি অপরের সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নিতে বাধ্য। যক্ষদ্ধ ব্যতীত অপর কোনো উপায়ে জমানির পক্ষে তার জাতীয় সবার্থসাধন করা অসম্পভব। অতএব মিলিটারিজম হচ্ছে নবজমানির একমাত্র ধম। জেনারেল বেয়ােরনহাডি যে সম্পািন্টবাদী সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। দস্যতাকে ধম বলে প্রচার করতে লোকে সহজেই কুষ্ঠিত হয়। ওরােপ মনোভাব প্ৰকাশ করতে হলে অপর দেশের লোকে অনেক বড়ো বড়ো নীতির কথায় তাকে bIጭበ[ Coቶጃ ! কিন্তু জমান-রাজমন্ত্রী কিংবা জমান-রাজসেনাপতির পক্ষে এ বিষয়ে কোনোরােপ কপটতা করবার প্রয়োজন নেই। জমানির রাজগারপরোহিতেরা যে নব্বশাস্ত্র রচনা করেছেন, জমানির রাজ-পরিষদের রাজনীতি সেই শাস্ত্রসংগত। জমান বৈজ্ঞানিকদের মতে ডারউইনের আবিস্কৃত ইভলিউশনের নিগলিতাৰ্থ হচ্ছে- জোর যার মািলক তার। প্রকৃতির নিয়ম লঙ্ঘন করলে মানষে শােধ মাতৃত্যুমখে পতিত হয়। জীবনটা যখন একটা মারামারি-কাটাকাটি ব্যাপার, তখন যে মারতে প্ৰস্তুত নয়। তাকে মরতে প্ৰস্তুত হতে হবে- এই হচ্ছে বিধির নিয়ম। ইভলিউশনের এই ব্যাখ্যা, নীটশে-নামক একটি প্রতিভাশালী লেখক সমগ্র জমানজাতিকে গ্রাহ্য করিয়েছেন। নীটশের মতে দয়া মমতা পরদঃখকাতরতা প্রভাতি মনোভাব দেওয়াতে মানষের প্রকৃতি দিবলৈ হয়ে পড়ে; এবং দািব লতাই হচ্ছে পথিবীতে একমাত্ৰ পাপ এবং সবলতাই একমাত্র পণ্য; শক্তিই হচ্ছে একাধারে সত্য শিব ও সন্দের। ইউরোপীয মানব যে এই সহজ সত্য ভুলে গেছল তার কারণ ইউরোপ খসেন্টধম-নামক রোগে জজ রত। খসেন্টধম যে এশিয়ায় জন্মলাভ করেছে তার কারণ, এশিয়াবাসীরা দাসের জাতি, সতরাং তাদের সকল ধমকিম দাসমনোভাবের উপর প্রতিষ্ঠিত। এই এশিয়ার ক্যানসার ইউরোপের দেহ হতে সমলে উৎপাটিত করতে হলে অস্ত্রচিকিৎসা ব্যতীত উপায়ান্তর নাই। ইউরোপের নবযাগের সাম্য মৈত্রী প্রভাতি মনোভাব ঐ প্রাচীন রোগের নাতন উপসাগ মাত্র। সতরাং ফরাসি ইংরেজ প্রভাতি যে-সকল জাতির দেহে এই-সকল রোগের লক্ষণ দেখা যায়, তাদের উচ্ছেদ করা জমান ক্ষত্রিয়দের পক্ষে একান্ত কর্তব্য। নীটশের এই মত জমান