পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Oyly প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ করে আর খাজানা জমিদার, অর্থাৎ, প্রথম ক্ষেত্রে সমগ্রজাতি আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষ। সতরাং যে টাকা জাতীয় কাযে ব্যয় করবার জন্য জাতির পক্ষে আদায় করা পাপকাষ, সেই টাকা ব্যক্তিবিশেষের পক্ষে নিজের ব্যয়ের জন্য আদায় করা যে কি হিসেবে পণ্যকায, তা বোঝবার মতো সক্ষম ধম জ্ঞান আমার নেই। আমি জানি এর উত্তরে পলিটিশিয়ানরা কি বলবেন। তাঁরা বলবেন যে, বতমান স্টেট তো জাতীয় নয়, ও হচ্ছে বিদেশী গবনমেণ্ট, অতএব এ ক্ষেত্রে সেন্টটের সবার্থ ও জাতীয় সবাৰ্থ এক নয়। তথাস্তু। কিন্তু নািতন ট্যাক্সের বিরদ্ধে চক্লবতীর্ণ সাহেব প্রমািখ জমিদারবগের জোরগলায় ঘোর প্রতিবাদের কারণ দশানো হয়েছে— রায়তের দারিদ্র্য। রায়ত যদি নতুন ট্যাক্সের চাপ আর তিলমাত্রও সইতে না পারে, তা হলে জমাবন্ধির চাপই যে সে কি করে সইতে পারবে, তা আমার বদ্ধির অগম্য। তবে আমি বঝতে পারি। নে বলে যে পলিটিশিয়ানরা বঝতে পারেন না তা অবশ্য হতেই পারে না। সতরাং জমিদার কর্তৃক হতদরিদ্র প্রজার উপর জমাবন্ধির চাপ দেবার কি-সব পেট্রিয়টিক এবং ন্যাশনালিস্ট ওরফে সর্বদেশী ও স্বরাজি যক্তি আছে, শোনবার জন্যে উৎসক হয়ে রইলাম। আপাতত দেখতে পাচ্ছি যে, যেখানে নিজেদের সবাৰ্থে আঘাত লাগে। সেখানে প্রজার সবার্থের কথা শনলে আমাদের পলিটিশিয়ানদের পেট্রিয়টিক জবর ঘাম দিয়ে ছেড়ে যায়। দেশের যাঁরা ভালো চান, তাঁদের পক্ষে রায়তদের উপরোক্ত দাবি কাটি প্ৰসন্নমনে গ্রাহ্য করে নেওয়া কতব্য। প্রথমত, এ-কাটি অধিকারে তারা অধিকারী হলে তাদের দারিদ্র্যের কিঞ্চিৎ লাঘব হবে; দ্বিতীয়ত, তারা তাদের দাসত্ব হতে মন্তিলাভ করবে। একমাত্র প্রাথমিক শিক্ষার বলে তাদের ‘দাস বদ্ধি দাির করা যাবে। না, সেই শিক্ষার সঙ্গে চাই তাদের অবস্থারও উন্নতি ঘটানো। পবোঁ যে রাশিয়ান ব্যারিস্টারের উক্তি উদধিত করে দিয়েছি, তিনিই তাঁর জমান অতিথিকে আর যে একটি কথা বলেছিলেন, সেটি এখানে তুলে দেবার লোভ সংবরণ করতে পারলাম না। সে কথা এই-- আমাদের জনসাধারণের মধ্যে সবচেয়ে কিসের বিশেষ অভাব আছে জানেন ?-- স্বাধিকারের জ্ঞান। মনস্তত্ত্ববিদেরা জানেন যে, সর্বত্বের জ্ঞান থেকেই মানষের অধিকারের জ্ঞান জন্মায়। আপনি বোধ হয় জানেন না যে, এ দেশের কৃষকদের মধ্যে অতি অলপসংখ্যক লোকের জমি তার নিজস্ব সম্পত্তি। বাংলার প্রজা যদি জমি হস্তান্তর করবার, গাছ কাটবার, কোঠাবাড়ি করবার, কুয়ো খোঁড়বার অধিকার পায়, এবং সেইসঙ্গে তার জোত মৌরসী-মোকররি হয়, তা হলে সে ইংরেজিতে যাকে বলে peasant proprietor তাই হয়ে উঠবে। প্ৰজা জমির মালিক হয়ে উঠলে জাতির শক্তি ও দেশের ঐশবয যে কতদার বেড়ে যায়। তার জাজবল্যমান উদাহরণ বিতর্তমান ফ্রান্স। আর প্রজাকে সর্বত্বহীন ও দরিদ্র করে রাখলে তার ফল যে কি হয়, তারও জাজবল্যমান উদাহরণ বিতর্তমান রাশিয়া। যাঁরা বলশেভিজামের ভয়ে কাতর তাঁদের অনরোধ করি যে, তাঁরা বাংলার রায়তকে বাংলার peasant proprietor করবার জন্য তৎপর হোন। যেরকম দিনকাল পড়েছে, তাতে করে মানযকে আর দাস ও দরিদ্র করে রাখা চলবে না। প্রজাকে এ-সব অধিকার